( প্রথম ) '্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বৌরপুর মূল্য।* আনা প্রকাশক-_ - ইত্ডিয়ান্‌ পাব্লিশি হাঁউস্‌ কার্ধ্যালয়-_৭৩1১, সুকিয়া স্ত্রী, শাখা দৌকান-__২০।১ কর্ণওয়ালিস্‌ স্রীট, কলিকাত!। কান্তিক প্রেস ২*, কর্ণওয়ালিস স্ীট কলিকাতা প্রীহরিচরণ মান দ্বারা। মুত্রিত। উত্তিষ্ঠত জাগ্রত ংশয় ১৪ ১৮ ২৫ ৩১ ৩৭ ৪8৫ ৫১ ৫৯ ৭২ ৭8 স্পীভ্তিন্নিক্ষেভন্ম স্পস্ট উত্তিষ্ঠত জাগ্রত উত্তিষ্ঠত, জাগ্রত! সকাল বেলায় ত ঈশ্বরের আলো আপনি এসে আমাদের ঘুম ভাঙিয়ে দেয়--সমন্ত রাজির গভীর নিন একমুহূর্দেই ভেঙে যাঁয়। কিন্তু সদ্যাবেলাকার মোহ কে ভাঙাবে ! সমন্ত দীর্ঘদিনের চিন্তা ও কর্ম হতে উৎক্ষিপ্ত একটা কুহকের আৰেষ্টন, তার থেকে চিত্তকে নির্শল উদার শাস্তির মধ্যে বাহির করে আন্ব কি করে? সমস্ত দিনটা একটা মাঁকড়যার মত ছালেয় উপর জান বিস্তার করে আমাদের নানাদিক থেকে শাস্তিনিকেতন $ জড়িয়ে রয়েচে-_-চিরস্তনকে, ভূমাকে একেবারে আড়াল করে রয়েছে--এই সমস্ত জালকে কাটিয়ে চেতনাকে অনন্তের মধ্যে জাগ্রত করে তুল্ব কি করে! ওরে, "উত্তিষ্ঠত ! জাগ্রত 1” দিন যখন নানা কর্ম নানা চি্তা নানা প্রবৃত্তির ভিতর দিয়ে একটি একটি পাঁক আমা- দের চারদিকে জড়াতে থাকে, বিশ্ব এবং আমার আত্মার মাঝখানে একটা আবরণ গড়ে তুল্‌তে থাকে, সেই সময়েই যদি মাঝে মাঝে আমাদের চেতনাকে সতর্ক করতে না থাক্ডি-"উত্তিষ্ঠত, জাগ্রত,” এই জাগরণের মন্ত্র যদি ক্ষণে ক্ষণে দিনের সমস্ত বিচিত্রব্যাপারের মাঝখাঁনেই আমাদের অন্তরাত্মা থেকে ধ্বনিত হয়ে না উঠতে থাকে তাহলে পাকের পর পাঁক পড়ে ফাঁসের পর ফাঁস লেগে শেষ কালে আমাদের অসাড় করে ফেলে-;?তখন আবল্য থেকে নিজেকে টেনে বের করতে আমাদের ২ উত্তিষ্ঠত জাগ্রত আর ইচ্ছাও থাকে না, নিজের চারিদিকের বেষ্টনকেই অত্যন্ত সত্য বলে জানি-_ তার অতীত যে উনুক্ত বিশুদ্ধ শাশ্বত সত্য তার প্রতি আমাদের বিশ্বাসই থাকে না, এমন কি তার প্রতি সংশয় অনুভব করবারও সচেষ্টতা আমাদের চলে ঘায়। অতএব সমস্ত দিন যখন নানা ব্যাপারের কলধ্বনি, তখন মনের গভীরতার মধ্যে একটি একতারা যন্ত্রে যেন বাজতে থাকে ওরে-_্উত্িষ্ঠত, জাগ্রত !” ১৭ই অগ্রহায়ণ ১৩১৫ শংশয় সংশয়ের যে বেদনা সেও যে ভাল। কিন্ত যে প্রকাঁও জড়তার কুগুলীর পাকে সংশয়কেও আবৃত করে থাকে- তার হাত থেকে যেন মুক্তিলাভ করি। নিজের অজ্ঞতাসম্বদ্ধে অজ্ঞানতার মত অজ্ঞান আর ত কিছু নেই। ঈশ্বরকে যে জানিনে, তাকে যে পাইনি এইটে যখন অন্ুভবমাত্র না করি তখনকার যে আত্মবিস্থৃত নিশ্চিন্ত সেইটে থেকে উত্ভিষ্ঠত-_জাগ্রত ! সেই অসাড়তাকে বিচলিত করে গভীরতর বেদন| জেগে উঠুক! আমি বুঝচিনে আমি পাচ্চিনে আমাদের অন্তরতম প্রকৃতি এই বলে যেন কেঁদে উঠতে পারে। মনের সমস্ত তারে এই গান বেজে উঠুক “সংশয় তিমির মাঝে না হেরি গতি হে!” & সংশর আমরা মনে করি যে ব্যক্তি নাস্তিক সেই সংশয়ী কিন্ত আমর! যেহেতু ঈশ্বরকে স্বীকার করি অতএব আমরা আর সংশরী নই। বাস্‌, এই বলে আমর! নিশ্চিন্ত হয়ে "বসে আছি-_-এবং ঈশ্বর সমন্ধে যাদের সঙ্গে আমাদের মতে না মেলে তাদেরই আমরা পাষণ্ড বলি, নাস্তিক বলি, সংশয়াত্াা বলি। এই নিয়ে সংসারে কত দলাঁদলি, কত বিবাদ বিরোধ, কত শাঁসন পীড়ন তার আর অস্ত নাই। আমাদের দল এবং আমাদের দলের বাহির এই ছুইভাগে মানুষকে বিভক্ত করে আমরা ঈশ্বরের অধিকারকে নিজের দলের বিশেষ সম্পত্তি বলে গণ্য করে আরামে বসে আছি। এসবদ্বে কোনো চিন্তা নেই সন্দেহ নেই। | এই বলে কেবল কথাটুকুর মধ্যে ঈশ্বরকে স্বীকার করে আমরা সমস্ত সংসার থেকে তাকে নির্বাপিত করে দেখ্চি। আমরা এমন ভাবে নখ শাস্তিনিকেতন গৃহে এবং সমাঞ্জে বাস করচি যেন সে গৃহে সে সমাজে ঈশ্বর নেই। আমর! জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত এই বিশ্বজগতের ভিতর দিয়ে এমন ভাবে চলে যাই যেন এজগতে সেই বিশ্বভৃবনেশ্বরের কোনো স্থান নেই। আমরা সকাল বেলায় আশ্চর্য্য আলোকের অভ্যুদয়ের মধ্যে জাগ্রত হয়ে সেই অদ্ভুত আবির্ভাবের মধ্যে তাকে দেখতে পাইনে এবং রাত্রিকালে যখন অনিমেষজাগ্রত নিঃশব্দ জ্যোতিফলোঁকের মাঝখানে আমরা নিদ্রার গভীরতার মধ্যে প্রবেশ করতে যাই তখন এই আশ্চর্য্য শয়নাগারের বিপুলমহিমান্থিত অন্ধকার শধ্যা- তলের কোনো এক প্রান্তেও সেই বিশ্বজননীর নিস্তবগন্ভীর ্িপ্বমুর্তি অনুভব করিনে। এই অনির্বচনীয় অদ্ভুত জগৎকে আমরা নিজের জমিজম। থর বাঁড়ির মধ্যেই সঙ্কীর্ণ করে দেখতে সঙ্কোচমাত্র বোধ করিনে। আমর! যেন ঈশ্বরের জগতে জন্মাইনি--নিজের ঘরেই জন্েছি_এখানে আমি আমি আমি ছাড়া আর কোনো কথাই নেই _তবু আমর! বলি আমরা ঈশ্বরকে মানি, তাঁর সম্বন্ধে আমার মধ্যে কোনো সংশয় নেই। আমার গৃহের মধ্যে সংসারের মধ্যে আমরা কোনে! দিন এমন করে চলিনে যাতে প্রকাশ পাঁয় যে এই গৃহের গৃহদেবত! তিনি, এই সংসার- রথকে চালিয়ে নিয়ে যাচ্চেন সেই মহাসারধ্থী। আমিই ঘরের কর্তা, আমিই সংসারের সংসারী । ভোরের বেল1 ঘুম ভাংবামাত্রই সেই চিন্তাই স্থরু হয় এবং রাত্রে ঘুম এসে সেই চিস্তাকেই ক্ষণকালের জন্য আবৃত করে। “আমির” দ্বারাই এই গৃহ এই সংসার ঠাস রয়েছে-_ কত দলিল, কত দস্তাবেজ, কত বিলিব্যবস্থা, কত বাঁদবিসম্বাদ ! কিন্তু ঈশ্বর কোথায় ! কেবল মুখের কথান্ন! আর কোথাও যে তিলধারণের স্থান নেই। এই মুখের কথায় ঈশ্বরকে শ্বীকার শান্তিনিকেতন করার মত নিজেকে ফাঁকি দেবার আর কি কিছুআছে! আমি এই সম্প্রদায়ভূক্ত, আঁমাঁদের এই মত, আমি এই করা বলি__ ঈশ্বরকে এইটুকুমাত্র ফাঁকির জায়গা ছেড়ে- দিয়ে তার পরে বাকি সমস্ত জায়গাটা অসঙ্কোচে নিজে জুড়ে বস্বার যে স্পর্থা, সেই স্পর্ধা আপনাকে আপনি জানেন! বলেই এত ভয়ানক । এই ম্পর্থা সংশয়ের সমস্ত বেদনাকে নিঃসাড় করে রাখে । আমরা যে জানিনে এটাও জাঁন্তে দেয় না। সংশয়ের বেদনা তখনি জেগে ওঠে যখন গোঁপনভাবে ঈশ্বর আমাদের চৈতন্যের একটা দিকে স্পর্শ করেন। তখন সংসারের মধ্যে থেকেও সংসার আমাদের কান্না থামাতে পারে না। এবং তাঁর দিকে ছুইবাহু প্রসারিত করেও অন্ধকারে তাঁর লাগাল পাইনে। তখন এইটে জানা আরম্ভ হয় যে, যা পেরেছি তাভে কোঁনোমতেই আমার চল্বে সংশর না এবং যা নাহলে আমার চলা অসম্ভব তা আমি কিছুতেই পাচ্চিনে। এমন অসহ্য কষ্টের অবস্থা আর কিছুই নেই। যখন প্রসবের সময় আসন্ন তখন গর্ভের শিশুকে একদিকে নাড়ি সম্পূর্ণ ছাড়চে না অন্যদিকে ভূমিষ্ঠ হবার বেগে তাকে আকর্ষণ করচে। মুক্তির সঙ্গে বন্ধনের টানাটানির তখনো কোনো মীমাংসা হয়নি । এই সময়ের বেদনাই জন্মদানের পূর্বস্থচনা, এই বেদনার অভাবকেই চিকিৎসক ভয় করেন। যথার্থ সংশয়ের ব্দেনাও আত্মাকে সত্যের মধ্যে মুক্তিদানের বেদনা । সংসার একদিকে তাকে আপনার মধ্যে আবুত আচ্ছন্ন করে রেখেছে বিমুক্ত সত্য অন্তদিকে তার অলক্ষ্যে তাকে আহ্বান করচে-_-সে অদ্ধকারের মধ্যেই আছে অথচ আলোককে না জেনেই সে আলোকের আকর্ষণ অনুভব করচে। সে মনে করচে বুঝি তার এই ব্যাকুলতার কোনে! খি শান্তিনিকেতন পরিণাম নেই, কেননা সে ত সম্মুথে পরিশামকে দেখতে পাচ্চে না, সে গর্ভস্থ শিশুর মত নিজের আবরণকেই চারদিকে অনুভব করচে। আন্মুক্‌ সেই অসহা বেদনা__সমস্ত প্রকৃতি কাদতে থাক-__-সে কান্নার অবসান হবে। কিন্ত যে কান্না বেদনায় জেগে ওঠে নি, ফুটে ওঠেনি, জড়তার শত বেষ্টনের মধ্যে প্রচ্ছন্ন হয়ে আছে--তাঁর যে কোনো পরিণাম নেই। সে যে রক্তেমাংসে অস্থিমজ্জায় জড়িয়ে রয়েই গেল_-তার ভার যে চব্বিশঘণ্টা নাড়ীতে নাড়ীতে বহন করে বেড়াতে হবে। যে দিন সংশয়ের ক্রন্দন আমাদের মধ্যে সত্য হয়ে ওঠে, সেদিন আমরা সম্প্রদায়ের মত, দর্শনের তর্ক ও শাস্ত্রের বাক্য নিয়ে আরাম পাইনে ; সেদিন আমর! একমুহূর্তেই বুঝতে পারি প্রেম ছাড়া আমাদের আর কোনে উপায় নেই-_সেদিন আমাদের প্রার্থনা ৬ সংশয় এই হয় যে, জ্প্রেম-আলে কে প্রকাঁশো জগপতি হে!” জ্ঞানের প্রকাশে আমাদের সংশয়ের সমস্ত অন্ধকার দূর হয় না। আমরা জেনেও জানিনে কখন? যখন আমাদের মধ্যে প্রেমের প্রকাশ হয় না। একবার ভেবে দেখনা! এই পৃথিবীতে কত শত সহমত লোক আমাকে বেষ্টন করে আছে। তার্দের যে জানিনে তা নয়, কিন্ত তারা আমার পক্ষে কিছুই নয়। সংসারে আমি এমন ভাবে চলি যেন এই অগণ্য 'লোক তাদের স্থছুংখ নিয়ে নেই। তবে কার আছে? যারা আমার আত্মীয় স্বজন, আমার প্রিক্ব্যক্তি, তারাই অগণ্য জীবকে ছাঁড়িযর়ে আছে। এই কয়েকটি লোকই আমার সংসার। কেন না এদেরই আমি প্রেমের আলোতে দেখেছি। এদেরই আমি কমবেশি পরিমাণে আমার আত্মারই সমান করে দেখেছি । আমার আত্ম যে সত্য, ২৯ শাস্তিনিকেতন আত্মপ্রেমে সেটা আমার কাছে একাস্ত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে-_সেই প্রেম যাদের মধ্যে প্রসারিত হতে পেরেছে তাদেরই আমি আত্মীয় বলে জানি__তাই তাদের সম্বন্ধে আমার কোনো সংশয় নেই, তাঁরা আমার পক্ষে অনেকটা আমারই মত সত্য । ঈশ্বর যে আছেন এবং সর্ধত্রই আছেন এ কথাটা যে আমার জানার অভাব আছে তা নয় কিন্ত আমি অহরহ সম্পূর্ণ এমন ভাঁবেই চলি যেন তিনি কোনোখানেই নেই। এর কারণ কি? তাঁর প্রতি আমার প্রেম জন্মে নি, সুতরাং তিনি থাকৃলেই বা কি না থাকলেই বাকি? তাঁর চেয়ে আমার নিজের ঘরের অতি তুচ্ছ বস্তও আমার কাছে বেশি করে আছে। প্রেম নেই বলেই তার দিকে আমাদের সমস্ত চোখ চাঁয় না, আমাদের সমস্ত কান যায় না, আমাদের সমস্ত মন খোলে না। এই জন্যেই ধিনি সকলের চেয়ে আছেন ১২. সংশয় তাঁকেই সকলের চেয়ে পাঁইনে--তাই এমন একটা অভাব জীবনে থেকে যাঁয় যা আঁর কিছুতেই কোনোমতেই পোরাতে পারে না। ঈশ্বর থেকেও থাঁকেন না__এত বড় প্রকাণ্ড না থাকা আমাদের পক্ষে আর কি আছে! এই না থাকার ভাঁরে আমরা প্রতিমুহুর্তেই মরচি। এই না! থাঁকাঁর মানে আর কিছুই না, আমাদের প্রেমের অভাব। এই না থাকারই শুফতায় জগতের সমস্ত লাবণ্য মারা গেল, জীবনের সমস্ত সৌন্দর্য্য নষ্ট হল। যিনি আছেন তিনি নেই এত বড় ক্ষতি কি দিয়ে পূরণ হবে! কিছুতেই কিছু হচ্চে না। দিনে রাত্রে এই জন্টেই ঘে গেলুম। সব জানি সব বুঝি, কিন্তু সমস্তই ব্যর্থ_ প্রেম-আলোকে প্রকাশো জগপতি হে ! ২৩শে অগ্রহায়ণ ১৩১৫ ১৩ অভাব ঈশ্বরকে যে আমর! দিন রাত্রি বাঁদ দিয়ে চলচি তাতে আমাদের সাংসারিক ক্ষতি যদি শিকি পয়সাও হত তাহলে তখনি সতর্ক হয়ে উঠ্তুম। কিন্তু সে বিপদ নেই হূর্য্য আমাদের আলে দিচ্চে পৃথিবী আমাদের অন্ন দিচ্চে, বৃহৎ লোকালয় তার সহ নাড়ী দিয়ে আমাদের সহঅ অভাব পুরণ করে চলেচে। তবে সংসারকে ঈশ্বরবঙ্জিত করে আমাদের কি অভাব হচ্চে! হায়, যে অভাব হচ্চে তা যতক্ষণ ন! জান্তে পারি ততক্ষণ আরামে নিঃসংশয়ে থাকি এবং সচ্ছল সংসারের মধ্যে বাস করে' মনে করি আমর! ঈশ্বরের বিশেষ অনুগৃহীত ব্যক্তি। কিন্ত ক্ষতিটা কি হয়তা কেমন করে বোঝানো যেতে পারে? ৯৪ জভাব এইখানে দৃষ্টান্তস্বরপে আমার একটি স্বপ্নের কথা বলি। আমি নিতান্ত বালক কালে মাতৃহীন। আমার বড় বয়সের জীবনে মার অধিষ্ঠান ছিল না। কাল রাত্রে স্বপ্ন দেখ্লুম আমি যেন বাল্যকালেই রয়ে গেছি। গঙ্গার ধারের বাগানবাড়িতে মা একটি ঘরে বসে রয়েছেন। মা আছেন ত আছেন_ তার আঁবিভাব ত সকল সময়ে চেতনাকে অধিকার করে থাকে না। আমিও মাতার প্রতি মন না দিয়ে তার ঘরের পাশ দিয়ে চলে গেলুম । বারান্দায় গিয়ে একমুহুর্তে আমার হঠাৎ কি হল জানিনে-_-আমার মনে এই কথাটা জেগে উঠ্ল যে মা আছেন। তখনি তাঁর ঘরে গিয়ে তার পায়ের ধুলো নিয়ে তাঁকে প্রণাম করলুম 1 তিনি আমার হাত ধরে আমাকে বল্লেন পতুমি এসেচ ?” এইথানেই স্বপ্প ভেঙে গেল। আমি ভাবতে লাগ্লুম-_মায়ের বাঁড়িতেই বাস ১৫ শান্তিনিকেতন করচি, তার ঘরের ছুয়ার দিয়েই দশবার করে আনাগোনা করি-তিনি আছেন এটা জানি সন্দেহ নেই কিন্ত যেন নেই এম্নি ভাবেই সংসার চল্চে ৷ তাতে ক্ষতিটা কি হচ্চে! তাঁর ভাড়ারের দ্বার তিনি বন্ধ করেন নি, তার অন্ন ভিনি পরিবেষণ করচেন, যখন ঘুমিয়ে থাঁকি তখনে! তার পাখা আমাকে বীজন করচে। কেবল প্রটুকু হচ্চে না, তিনি আমার হাতটি ধরে বল্চেন না, তুমি এসেচ! অন্ন জল ধন জন সমন্তই আছে কিন্ত সেই স্বরটি সেই স্পর্শ টি কোথায়! মন যখন সম্পূর্ণ জেগে উঠে সেইটিকেই চান্স এবং চেয়ে যখন না পায়, কেবল উপকরণভরা ঘরে ঘরে খুজে বেড়ায় তখন অন্নজল তার আর কিছুতেই রোচে ন|। একবার ভাল করে ভেবে দেখ, জগতে কোনো! জিনিষের£কাঁছে কোনে মানুষের কাছে যাওয়া আমাদের জীবনে অল্পই ঘটে। পরম আত্মীয়ের নিকট দিয়েও আমর! প্রত্যহ ১ অভাব আনাগোনা করি বটে কিন্ত দৈবাৎ একসুহ্র্ত তার কাছে গিয়ে পৌছই। কত দিন তার সঙ্গে নিভৃতে কথা কয়েছি এবং সকাল সন্ধ্যার আলোকে একসঙ্গে বেড়িয়েছি কিন্তু এর মধ্যে হয় ত সকলের চেয়ে কেবল একদিনের কথা মনে পড়ে যেদিন হৃদয় পরিপূর্ণ হয়ে উঠে মনে হয়েছে আমি তাঁর কাছে এসেছি । এমন শত সহস্র লোক আছে যাঁরা সমস্ত জীবনে একবারও কোনো জিনিষের কোনো মানুষের কাছে আসে নি। জগতে জন্মেছে কিন্ত জগতের সঙ্গে তাদ্দের অব্যবহিত সংস্পর্শ ঘটে নি। ঘটে নি যে, এও তারা একেবারেই জানে না। তারা যে সকলের সঙ্গে হাসচে খেলচে গল্পগুজব করচে, নানা লোকের সঙ্গে দেনা পাওনা আনাগোনা চল্চে তারা ভাবচে এই ত আমি সকলের সঙ্গে আছি। এইরূপ সঙ্গে থাকার মধ্যে সঙ্গটা যে কতই যৎসামান্ত সে তার বোধের অতীত । ্ আত্মার দৃষঠি বাল্যকালে আমার দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে গিয়েছিল কিন্ত আমি তা জান্তুম না। আমি তাবতুম দেখ! বুঝি এই রকমই-_সকলে বুঝি এরই পরিমাণেই দেখে। একদিন দৈবাঁৎ লীলাচ্ছলে আমার কোন সঙলীর চষম! নিয়ে চোখে পরেই দেখি, সব জিনিষ স্পষ্ট দেখা যাচ্চে। তখন মনে হল আমি যেন হঠাৎ সকলের কাছে এসে পড়েছি, সমস্তকে এই যে স্পষ্ট দেখা ও কাছে পাওয়ার আনন্দ, এর দ্বারা বিশ্বভৃবনকে যেন হঠাৎ দিগুণ করে লাভ করলাম অথচ এতদিন যে আমি এত লোকসান বহন করে বেড়াচ্চি তা জান্তুমই না । এ যেমন চোখ দিয়ে কাছে আসা, তেমনি আত্মা দিয়ে কাছে আসা আছে। সেই রকম করে যাঁরই কাছে আমি সেই আমার হাত আত্মার ভু তুলে ধরে বলে তুমি এসেচ ! এই যে জল বাস চন্দ্র কুর্ধ্য, আমাদের পরমবন্ধু, এরা আমাদের নান! কাজ করচে, কিন্ত আমাদের হাত ধরচে না, আনন্দিত হয়ে ব্লচে না, তুমি এসেছ! যদি তাদের তেমনি কাছে যেতে পারতুম, বদি তাদের সেই স্পর্শ দেই সম্ভাষণ লাভ করতুম তাহলে মুহূর্তের মধ্যে বুঝতে পারতুম তাদের কৃত সমস্ত উপকারের চেয়ে এইটুকু কত বড়। মানুষের মধ্যে আমি চিরজীবন 'বাস করলুষ কিন্ত মান্য আমাকে স্পর্শ করে বলচে না, তুমি এসেচ! আমি একটা আবরণের মধ্যে আবৃত হয়ে পৃথিবীতে সঞ্চরণ করচি। ডিমের মধ্যে পক্ষীশিশ্ড যেমন পৃথিবীতে জন্মেও জন্মলাভ করে না এও সেই রকম। এই অস্ফুট চেতনার ডিমের ভিতর থেকে জন্মলাভই আধ্যাত্মিক জন্ম। সেই জন্মের দ্বারাই আমরা ঘবিজ হব। সেই জন্মই জগতে বথার্থরূপে জন্ম-_জীবচৈতন্তের তন শাস্তিনিকেতন বিশ্বচৈতন্যের মধ্যে জন্ম। তখনি পক্গীশিশ পক্ষীমাতার পক্ষপুটের সম্পূর্ণ সংস্পর্শ লাভ করে--তখনি মানুষ সর্বত্রই সেই সর্ধকে প্রাপ্ত হয়। সেই প্রাপ্ত হওয়া যে কি আশ্চর্য সার্থকতা কি অনির্কবচনীয় আনন্দ তা আমর! জানিনে কিন্তু জীবনে কি ক্ষণে ক্ষণে তার আভাসমাত্রও পাইনে ! আধ্যাত্মিকতায় আমাদের আর কিছু দেয় না আমাদের ওদাসীন্য আমাদের অসাড়তা৷ ঘুচিয়ে দেক়। অর্থাৎ তখনি আমরা চেতনার দ্বারা চেতনাকে, আত্মার দ্বারা আত্মাকে পাই। সেই রকম করে যখন পাঁই তখন আর আমাদের বুঝতে বাকি থাকে না যে সমস্তই তার আনন্দবূপ। তৃণ থেকে মানুষ পর্য্স্ত জগতে যেখানেই আমার চিত্ত উদাসীন থাকে সেখানেই আমাদের আধ্যাত্মিকতা সীমাবদ্ধ হয়েছে এটি জান্তে হবে । আমাদের চেতনা আমাদের হি আত্মার দৃষ্টি আত্মা বখন সর্বত্র প্রসারিত হয় তখন জগতের করি, ইন্দ্রিয়ের দ্বারা নয়, বুদ্ধির ছারা নয়, বৈজ্ঞানিক যুক্তি দ্বারা নয়। ঢেই পরিপূর্ণ অনুভূতি একটি আশ্চর্য্য ব্যাপার । এই সমুখের গাছটিকেও যদি সেই সত্তাবূপে গভীররূপে অনুভব করি তবে যে আমার সমস্ত সত্তা আনন্দে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। তাই দেখিনে বলে একে চোখ দিয়ে দেখবামাত্র এতে আমার কোন প্রয়োজন নেই বলে এর সম্মুখ দিয়ে চলে যাই, এই গাছের সত্যে আমার সত্যকে জাগিয়ে তুলে আমাকে আনন্দের অধিকারী করে না। মান্ষকেও আমরা. আত্মা দিয়ে দেখিনে- ইন্দ্র দিয়ে যুক্তি দিয়ে স্থার্থ দিয়ে সংসার দিয়ে সংস্কার দিয়ে দেখি-_ তাকে পরিবারের মানুষ, বা প্রয়োজনের মানুষ, বা নিঃসম্পর্ক মানুষ .বা কোনে! একট! বিশেষ শ্রেণীভুক্ত মানুষ বলেই দেখি ২২ শান্তিনিকেতন স্থতরাং সেই সীমাতেই গিয়ে আমার পরিচয় ঠেকে যায়-সেই খানেই দরজা! কদ্ধ__তার ভিতরে আর প্রবেশ করতে পারিনে-_তাঁকেও আস্মা বলে আমার আত্মা প্রত্যক্ষ ভাবে সম্ভাষণ করতে পারে না। যদি পারত তবে পরম্প র হাত ধরে ব্ল্ত তুমি এসেচ ! আধ্যাত্মিক সাধনার যে চরম লক্ষ্য কিতা উপনিষদে স্পষ্ট লেখা আছে-__তে সর্ধগং সর্ধতঃ প্রাপ্য ধীরা যুক্তাত্সানং সর্ব মেবাবিশত্তি”_ ধীর ব্যক্তিরা সর্বব্যাপীকে সকল দিক থেকে পেয়ে যুক্তাস্া হয়ে সর্বত্রই প্রবেশ করেন। এই যে সর্বত্র প্রবেশ করবার ক্ষমতাই শেষ ক্ষমতা । প্রবেশ করার মানেই হচ্ছে যুক্তাত্ম! হওয়া । যখন সমস্ত পাপের সমস্ত অভ্যাসের সংস্কারের আবরণ থেকে মুক্ত হনে আমাদের আত্মা সর্বত্রই আত্মার সঙ্গে যুক্ত হয় তখনি সে সর্বত্র প্রবেশ করে__সেই আত্মার গিরে পৌঁছলে সে দ্বারে এসে ২২ আত্মার দৃষ্টি ঠেকে-সে মৃত্যুতেই আবদ্ধ হয়, অমৃতং বদ্ধিভাতি, অমৃতরূপে ধিনি সকলের মধ্যেই প্রকাশমান সেই অমৃতের মধ্যে আত্মা পৌছতে পারে না_সে আর সমস্তই 'দেখে কেবল আনন্দরূপমমূতং দেখে ন1। এই ষে আত্মা দিয়ে বিশ্বের সর্ব আত্মার মধ্যে প্রবেশ করা এই ত আমাদের সাধনার লক্ষ্য । প্রতিদিন এই পথেই যে আমরা চলচি এটা ত আমাদের উপলব্ধি করতে হুবে। অন্ধভাবে জড়ভাবে ত এটা হবে না । চেতন ভাবেই ত চেতনার বিস্তার হতে থাক্‌বে। প্রতিদিন ত আমাদের বুঝতে হবে একটু একটু করে আমাদের প্রবেশ পথ খুলে যাচ্ছে আমাদের অধিকার ব্যাপ্ত হচ্ছে৷ সকলের সঙ্গে বেশি করে মিল্তে পাচ্ছি, অন্নে অন্নে সমস্ত বিরোধ কেটে যাচ্চে মান্গষের সঙ্গে মিলনের মধ্যে, সংসারের কর্মের মধ্যে, ভূমার প্রকাশ প্রতিদিন অব্যাহত ২৩ শাস্তিনিকেতন হয়ে আম্চে। আমিত্ব বলে যে মুহুর্তে আবরণ আমাঁকে সকলের সঙ্গে অত্যন্ত বিভক্ত করে রেখেছিল তা ধীরে ধীরে ক্ষীণ হয়ে আস্চে, ক্রমেই তা স্বচ্ছ হয়ে তার ভিতর থেকে নিখিলের আলো ক্রমে ক্রমে স্ফুটতর হয়ে দেখা যাচ্চে--আমি আমার দ্বারা কাউকে আচ্ছন্ন কাউকে বিরত করচিনে, আমার মধ্যে অন্তের এবং অন্যের মধ্যে আমার বাধা প্রত্যহই কেটে যাচ্চে। ২৪ পাঁপ এমনি করে?আত্মা। যখন আত্মাকে চায় আর কিছুতেই তাকে থামিয়ে রাখতে পারে না তখনি পাঁপ জিনিষটা কি তা আমরা স্পষ্ট বুঝতে পারি । আমাদের চৈতন্য যখন বরফগলা ঝরণার মত ছুটে বেরতে চায় তখনি পাঁপের বাঁধাকে মে সম্পূর্ণন্ূপে উপলবি করতে পারে-এক মুহূর্ত আর 'তাকে ভুলে থাকৃতে পারে না-__-তাঁকে ক্ষয় করবার জন্তে তাঁকে সরিয়ে ফেলবার জন্যে আমাদের পীড়িত চৈতন্য পাঁপের চারিদিকে ফেনিল হয়ে উঠ্‌তে থাকে। বস্তত আমাদের চিত্ত খন চল্তে থাকে তখন সে তার গতির সংঘাঁতেই ছোট হুড়িটিকেও অনুভব করে, কিছুই তার আর অগোচর থাকে না।. তার পূর্বে পাঁপ পুণ্যকে আমরা সামাজিক ২৫ শাস্তিনিকেতন ভাঁলমন্দ সুবিধা অস্থবিধার জিনিষ বলেই জানি। চরিত্রকে এমন করে গড়ি যাতে লোঁকসমাজের উপযুক্ত হুই, যাঁতে ভদ্রতার আদর্শ রক্ষা হয়। সেইটুকুতে ক্কতকার্ধ্য হলেই আমাদের মনে আর কোন সঙ্কোচ থাকে না) আমরা মনে করি চরিত্রনীতির যে উপযোগিত। তা আমার দ্বারা সিদ্ধ হল। এমন সময় একদিন যখন আত্মা জেগে ওঠে, জগতের মধ্যে সে আত্মাকে খোজে তখন দে দেখতে পায় যে শুধু ভদ্রতার কাজ নয়, শুধু সমাজ রক্ষা করা নয়-_ প্রয়োজন আরো বড়, বাঁধ আরো গভীর । উপর থেকে কেটে কুটে রাস্তা সাফি করে দিয়েছি, সংসারের পথে কোনো বাধা দিচ্চে না, কারে চোখে পড়চে না; কিন্তু শিকড়গুলো সমস্তই ভিতরে রয়ে গেছে--তার! পরম্পরে ভিতরে ভিতরে জড়াজড়ি করে একেবারে জাল বুনে রেখেছে, আধ্যাত্মিক চাষ-আবাদে ০সথানে পদে পদে ৬. পাঁপ ঠেকে যেতে হয়। অতি ক্ষুদ্র অতি হুঙ্ষম শিকড়টিও জড়িয়ে ধরে, আবরণ রচনা করে । তখন পূর্বে যে পাঁপটি চোখে পড়েনি তাঁকেও দেখতে পাই এবং পাঁপ জিনিষটা আমাদের পরম সার্ঘকতার পথে যে কি রকম বাধা তাও বুঝতে পারি। তখন মানুষের দিকে না তাকিয়ে কোনো সামাজিক প্রয়োজনের দিকে না তাকিয়ে পাঁপকে কেবল পাঁপ বলেই সমস্ত অন্তঃকরণের সঙ্গে ঠেল! দিতে থাঁকি-__ তাকে সহা করা অসম্ভব হয়ে উঠে। সেষে চরম মিলনের, পরম প্রেমের পথ দলবল নিয়ে জুড়ে বসে আছে--তার সম্বন্ধে অন্যকে বা নিজেকে ফাকি দেওয়া আর চল্বে না লোকের কাছে ভাল হয়ে আর কোন সুখ নেই--তখন সমস্ত অন্তঃকরণ দিয়ে সেই নির্মল স্বরূপকে বল্তে হবে, বিশ্বানি ছুরিতানি পরাস্বি- সমস্ত পাপ দূর কর--একেবারে বিশ্বুরিত--সমস্ত পাঁপ--একটুও বাঁকি থাক্‌লে ৭ শাস্তিনিকেতন চল্বে নাঁ_কেননা তুমি শুদ্ধং অপাঁপবিদ্ধং, আত্মা তোমাকেই চাঁয়-_-সেই তাঁর একমাত্র যথার্থ চাওয়া, সেই তার শেষ চাওয়া। হে সর্বগ, তোমাকে, সর্ধতঃ প্রাপ্য, সকল দিক থেকে পেয়ে যুক্তাত্মা হব, সকলের মধ্যেই প্রবেশ লাভ করব সেই আশ্চর্য সৌভাগ্যের ধারণাও এখন আমার মনে হয় না কিন্ত এই অন্ুগ্রহটুকু করতে হবে, যে, তোমার পরিপূর্ণ প্রকাশের অধিকারী নাই হই তবু আমার রুদ্ধ্ধারের ছিদ্র দিয়ে তোমার সেইটুকু আলোক আস্গক যে আলোকে ঘরের আবদ্ধ অন্ধকারকে আমি অন্ধকার বলে জানতে পারি। রাত্রে ঘার জানালা বন্ধ করে অচেতন হয়ে ঘুমিয়ে ছিলুম। সকাল বেলায় বারের ফাঁক দিয়ে যখন আলো ঢুকল তখন জড়শয্যায় পড়ে থেকে হঠাৎ বাইরের স্ুনির্মল প্রভাতের আবির্ভাব আমার তন্দ্রালস চিত্তকে আঘাত করল । তখন তগ্ুশয্যার তাপ অসহা বোধ হল, ২৮ পাঁপ তখন নিজের নিংশ্বাস-কলুধিত বদ্ধ ঘরের বাতাস আমার নিঃশ্বাস রোধ করতে লাগল; তখন ত আর থাকৃতে পার! গেল না; তখন উন্মুক্ত নিখিলের স্গিগ্ধতা নির্মলতা পবিত্রতা, সমস্ত সৌন্দর্য তসৌগন্ধ্য সঙ্গীতের আভাস আমাকে আহ্বান করে বাইরে নিয়ে এল তুমি তেমনি করে আমার আবরণের কোনো ছই একটা ছিদ্রের ভিতর দিয়ে তোমার আলোকের দূতকে তোমার মুক্তির বার্তাবহকে প্রেরণ কর-_তাহলেই নিজের আবদ্ধতার তাপ এবং কলুষ এবং অন্ধকার আমাকে আর সুস্থির হতে দেবেনা, আরামের শধ্যা আমাকে দগ্ধ করতে থাকৃবে, তখন বল্‌্তেই হবে যেনাহং নামৃতঃ স্তাম্‌ কিমহং তেন কৃর্য্যাম্‌! ২৫শে অগ্রহায়ণ গুআভজামারোতিি ছ্ঃখ আমাদের উপাসনার মন্ত্রে আছে, নমঃ সম্ভবায়চ ময়ৌভবায়চ-স্ুখকরকে নমস্কার করি, কল্যাণকরকে নমস্কার। কিন্তু আমরা স্বথকরকেই নমস্কার করি, কল্যাণকরকে সব সময়ে নমস্কার করতে পারিনে । কল্যাণ কর যে শুধু স্থখকর ন'ন, তিনি যে ছুঃখকর। আমরা সুখকেই তাঁর দান বলে জানি আর ছুংখকে কোনো! ছর্বক্কৃত বিড়ম্বনা বলেই জ্ঞান করি। এই জন্তে ছুঃখভীরু বেদনাকাতর আমরা দুঃখ থেকে নিজেকে বাঁচাবার জন্তে নানা প্রকার আবরণ রচনা করি, আমরা কেবলি লুকিয়ে থাঁকৃতে চাই। তাতে কি হয়? তাতে সত্যের পূর্ণ সংস্পর্শ থেকে আমরা বঞ্চিত হই। হে ধনী বিলাসী মস্ত আর়াঁস থেকে নিজেকে বাচিয়ে কেবল আরামের মধ্যে পরিবুত হস্কে থাকে । তাতে কি হয়? তাতে সে নিজেকে পঙ্গু করে ফেলে; নিজের হাত-পায়ের উপর তার অধিকার থাঁকে ন, যে সমস্ত শক্তি নিয়ে সে পৃথিবীতে জন্মেছিল সেগুলি কর্ম অভাবে পরিণত হতে পাঁরে না, মুষ্ড়ে মায়, বিগ্ড়ে যায়। ম্বরচিত আবরণের মধ্যে সে একটি কৃত্রিম জগতে বাস করে। কৃত্রিম জগৎ আমাদের প্রকৃতিকে কখনই তার সমস্ত স্বাভাবিক খাগ্চ জোগাতে পারে না, এই জন্তে সে অবস্থায় আমাদের স্বভাব একটি ঘরগড়া পুতুলের মত হয়ে ওঠে, পূর্ণতালাভ করে না । ছুঃখের আঘাত থেকে আমাদের মনকে ভয়ে ভয়ে কেবলি বাঁচিয়ে রাখ্বার চেষ্টা করলে জগতে আমাদের অসম্পূর্ণভাবে বাস করা হয় সুতরাং ভাতে কখনই আমাদের স্বাস্থ্যরক্ষা ও শক্তির পরিণতি হয় না। ৩১ শাস্তিনিকেতন পৃথিবীতে এসে যে ব্যক্তি হুঃখ পেলে না সে লোক ঈশ্বরের কাছ থেকে তার সব পাওনা পেলে না-_তার পাথেয় কম পড়ে গেল। যাদের স্বভাব অতিবেদনাশীল, আত্মীয় স্বজন বন্ধুবান্ধব সবাই তাদের বাঁচিয়ে চলে )-_ সে ছোটক্রে বড় করে তোলে বলেই লোকে কেবলি বলে কাজ নেই-_তার সম্বন্ধে লোকের কথাবার্তা ব্যবহার কিছুই স্বাভাবিক হয় না । সে, সব কথা! শোনে না কিন্বা ঠিক কথা শোনে না-তার যা উপযুক্ত পাওন! তা সে সবটা পাক না কিম্বা ঠিক মত পায় না। এতে তাঁর মঙ্গল হতেই পারে না। যে ব্যক্তি বন্ধুর কাছ থেকে কখনে! আঘাত পায় না কেবলি প্রশ্রয় পাঁয় সে হতভাগ্য বন্ধের পূর্ণ আশ্মাদ থেকে বঞ্চিত হয়- বন্ধুরা তার সম্বন্ধে পূর্ণক্ূপে বন্ধু হয়ে উঠ্‌্তে পারে না । জগতে এই যে আমাদের ছুঃখের পাঁওনা এ যে সম্পূর্ণ ন্যায়সঙ্গত হবেই তা! নর। যাকে ৩. ছংখ আমরা অন্তায় বলি অবিচার বলি তাও আমাদের গ্রহণ করতে হবে-- অত্যন্ত সাব- ধানে হুস্হিসাবের খাতা খুলে কেবলমাত্র স্তায্যটুকুর ভিতর দিয়েই নিজেকে মানুষ করে তোলা--সে ত হয়েও ওঠে না এবং হলেও তাতে আমাদের মঙ্গল হয় না। অন্যায় এবং অবিচারকেও আমরা উপযুক্ত ভাবে গ্রহণ করতে পারি এমন আমাদের সামর্ঘ্য থাকা চাই। পৃথিবীতে আমাদের ভাগে যে সুখ পড়ে তাও কি একেবারে ঠিক হিসাবমত পড়ে, অনেক সময়েই কি আমর! গাঁঠের থেকে ঘা দাম দিয়েছি তার চেয়ে বেশি খরিদ করে ফেলিনে ? কিন্তু কথনো ত মনে করিনে আমি তার অযোগ্য ! সবটুকুইত দিব্য অসক্কোঁচে দখল করি! ছুঃখের বেলাতেই কি কেবল স্তায় অন্ায়ের হিসাব মেলাতে হবে? ঠিক হিসাব মিলিয়ে কোনে। জিনিষ যে আম্রা পাইনে। ২0৩ শাস্িনিকেতন তার একটি কারণ আছে। গ্রহণ এবং বর্জনের ভিতর দিয়েই আমাদের প্রাণের ক্রিয়া চল্তে থাকে কেন্দ্রান্গ এবং কেন্ত্রতিগ এই ছুটো শক্তিই আমাদের পক্ষে সমান গৌরবের_-আমাঁদের প্রাণের আমাদের বুদ্ধির আমাদের সৌন্দধ্যবোধের আমাদের মঙ্গল প্রবৃত্তির, বস্তুত আমাদের সমস্ত শ্রেষ্ঠতার মুল ধর্মই এই যে সে ষে কেবলমাত্র নেবে তা নয় সে ত্যাগও করবে। এই জন্যই আমাদের আহাধ্য পদার্থে ঠিক হিসাবত আমাদের প্রয়োজনের উপকরণ থাঁকে না তাতে যেমন থাগ্ভ অংশ আছে তেমনি অখাগ্ত অংশও আছে । এই অথাগ্চ অংশ শরীর পরিত্যাগ করে। যদি ঠিক ওজন মত নিছক থাস্য পদার্থ আমরা গ্রহণ করি তাঁহলে আমাদের চলে না, শরীর ব্যাধিগ্রস্ত হয়। কারপ কেবল কি আমাদের পাকশক্তি ও পাঁক্ন্ত্ আছে ?- আমাদের ত্যাগশক্তি ও ত্যাগযন্ত্ ৬৪ হ্ঃখ আছে--সেই শক্তি সেই যগ্রকেও আমাদের ক্ষাজ দিতে হবে, তবেই গ্রহণ বর্জনের সামঞজন্তে প্রাণের পূর্ণতাসাঁধন ঘটবে। সংসারে তেমনি আমর! যে কেবলমাত্র স্যাষ্যটুকু 'পাঁৰ, কেউ আমাদের প্রতি কোঁনে! - অবিচার করবে না এও বিধান নয়। সংসারে এই স্তায়ের জঙ্গে অন্তায় মিশ্রিত থাকা আমাদের চরিত্রের পক্ষে একাস্ত আবশ্তক । নিঃশ্বাস প্রশ্বীসের ক্রিয়ার মত আমাদের চরিত্রের এমন একটি সহজ ক্ষমতা থাকা চাই যাতে আমাদের যেটুকু প্রাপ্য সেটুকু অনায়াসে গ্রহণ করি এবং যেটুকু ত্যাজ্য সেটুকু বিনাক্ষোভে ত্যাগ করতে পারি। অতএব হুঃখ এবং আঘাত ভ্ভাষ্য হোক বা অন্তাষ্য হোক তার সংস্পর্শ থেকে নিজেকে নিঃশেষে বাচিয়ে চলবার অতিচেষ্টায় আমাদের মনুস্তত্বকে দুর্বল ও ব্যাধিগ্রস্ত করে তোলে । এই ভীরুতায় শুধুমাত্র বিলাসিতার পেলবতা 4৫ শান্তিনিকেতন ও দৌর্বল্য জন্মে তা নয় যে সমস্ত অতিবেদনা- শীল লোক আঘাতের ভয়ে নিজেকে আবৃত করে তাদের শুচিতা নষ্ট হয় আবরণের ভিতরে থাকে ;_-যতই লোকের ভয়ে তারা সেগুলো! লোকচক্ষুর সামনে বের করতে না চায় ততই সেগুলো দুষিত হয়ে উঠে স্বাস্থ্যকে বিকৃত করতে থাকে । পৃথিবীর নিন্বা অবিচার ছুঃখকষ্টকে যাঁর! অনাধে অসঙ্কোচে গ্রহণ করতে পারে তার! কেবল বলিষ্ঠ হয় তা নয় তার! নির্মল হয়, অনাবৃত জীবনের উপর দিয়ে জগতের পুর্ণসংঘাত লেগে তাদের কলুষ ক্ষয় হয়ে ' যেতে থাকে । অতএব সমস্ত মনপ্রাণ নিষ্বে প্রস্তুত হও-_ যিনি সুখকর তাকে প্রণাম কর এবং যিনি ছুঃখকর তাঁকেও প্রণাম কর_তা হলেই স্বাস্থ্যলাভ করবে শক্তিলাভ করবে--ধিনি শিব্,িনিশিব্তর্‌ তাঁকেই প্রণাম করা হবে। রি এ ১০৫ ১৩১৫। / শত 7... ত্যাগ প্রতিদিন প্রাতে আমরা যে এই উপাসনা করচি যদি তাঁর মধ্যে কিছু সত্য থাকে তবে তার সাহাঁষ্যে আমরা প্রত্যহ অল্পে অল্পে ত্যাগের ঞরন্ত প্রস্তুত হচ্চি। নিতান্তই প্রস্তত হওয়া চাই, কারণ, সংসারের মধ্যে একটি ত্যাগের ধর্ম আছে, তাঁর বিধান অমোঘ। সে আমাদের কোঁথাঁও দীঁড়াতে দিতে চার না; সে বলে কেবলি ছাড়তে হবে এবং এগতে হবে। এমন কোথাও কিছুই দেখতে পাচ্চিনে যেখানে পৌঁছে বন্তে পারি এই খানেই সমস্ত সমাপ্ত হল, পরিপূর্ণ হল, অতএব এখান থেকে আর কোনোকালেই নড়ব ন!। সংসারের ধর্মই যখন কেবল ধরে রাখা নয়, সরিয়ে দেওয়া, এগিয়ে দেওয়া--তখন তারই সঙ্গে আমাদের ইচ্ছার সামগ্রন্ত সাধন শারস্তিনিকেতন না করলে ছুটোতে কেবলি ঠোঁকাঠুকি হতে থাকে । আমর! যদি কেবলি বলি আমরা থাকব আমরা রাখব আর সংসার বলে তোমাকে ছাড়তে হবে চল্তে হবে তাহলে বিষম কষ্ট উৎপন্ন হতে থাকে । আমাদের ইচ্ছাকে পরাস্ত হতে হয়-_-যা আমর1 ছাড়তে চাঁইনে তা আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া! হয়। অতএব আমাদের ইচ্ছাকেও এই বিশ্ধধন্মের সুরে বাধতে হবে। বিশ্বধর্মের সঙ্গে আমাদের ইচ্ছাকে মেলাতে পারলেই আমর! বস্তত স্বাধীন হই। স্বাধী- নতার নিয়মই তাই। আমি স্বেচ্ছায় বিশ্বের সঙ্গে যোগ না দিই যদি, তাহলেই বিশ্ব আমার প্রতি জবরদস্তি করে আমাকে তার অন্গগত করবে--তখন আমার আনন্দ থাকৃবে না, গৌরব থাকবে না_-তখন দাসের মত সংসারের কানমল! খাব । অতএব একদিন এ কথা যেন সংসার ন! ি ত্যাগ বল্‌্তে পারে যে তোমার কাছ থেকে কেড়ে নেব, আমিই যেন বল্তে পারি আমি ত্যাগ করব। কিন্তু প্রতিদিনই যদি ইচ্ছাকে এই ত্যাগের অভিমুখে প্রস্তুত না করি তবে মৃত্যু ও ক্ষতি যখন তার বড় বড় দাবি নিয়ে আমাদের সম্মথে এসে দীড়াবে তখন তাঁকে কোঁনো মতে ফাঁকি দিতে ইচ্ছা হবে অথচ সেখানে একেবারেই ফাঁকি চল্বে না-সে বড় দুঃখের দিন উপস্থিত হবে। এই ত্যাগের দ্বারা আমরা দারিদ্র্য ও রিক্তা লাভ করি এমন কথা যেন আমাদের মনে না হয়। পূর্ণতররূপে লাভ করবার জন্তেই আমাদের ত্যাগ । আমরা যেটা থেকে বেরিয়ে না আস্ব সেটাকে আমরা পাঁব না। গর্ভের মধ্যে আবৃত শিশু তার মাকে পায় না-সে যখন নাড়ির বন্ধন কাটিয়ে ভূমি হয়, স্বাধীন হয়, তখনি সে তার মাকে পূর্ণ তরভাবে পায়। উঠি শান্তিনিকেতন এই জগতের গর্ভাবরণের মধ্যে থেকে আমাদের সেই রকম করে যুক্ত হতে হবে-_ তাহলেই যথার্থ ভাবে আমরা জগৎকে পাঁব-_- কারণ, শ্বাধীন ভাবে পাৰ। আমরা জগতের মধ্যে বদ্ধ হয়ে ভ্রণের মত জগৎকে দেখতেই পাইনে-_িনি মুক্ত হয়েছেন, তিনিই জগৎকে জানেন, জগৎকে পান। এই জন্যই বলছি যে লোক সংসারের ভিতরে জড়িয়ে রয়েছে সেই যে আসল ংসারী তা নয়_যে সংসার থেকে বেরিয়ে এসেছে সেই সংসারী-_কারণ, সে তখন সংসারের থাকে না সংসার তারই হয়। সেই সত্য করে বল্‌্তে পারে আমার সংসার । ঘোড়া গাড়ির সঙ্গে লাগামে বদ্ধ হয়ে গাড়ি চালায়-_-কিস্তু ঘোড়া! কি বল্‌্তে পারে গাড়িটা আমার? বস্তত গাঁড়ির চাকার সঙ্গে তার বেশি তফাৎ কি? যে সারথি মুক্ত থেকে গাড়ি চালায় গাড়ির উপরে কর্তৃত্ব তারই ॥ ৪৬ ত্যাগ যদি কর্তা হতে চাই তবে মুক্ত হতে হবে । এই অন্ত গীতা সেই যোগকেই কর্মযোগ বলেচেন যে যোগে আমরা অনাসক্ত হয়ে কর্ম করি। অনাসক্ত হয়ে কর্ম করলেই কর্মের উপর আমার পূর্ণ অধিকার জন্মে-_ নইলে কর্ণের সঙ্গে জড়ীভূত হরে আমর! কর্মবেরই অঙ্গীতৃত হয়ে পড়ি, আমরা কর্থী হইনে। অতএব সংদারকে লাভ করতে হলে আমাদের সংসারের বাইরে যেতে হবে, এবং কর্শুকে সাঁধন করতে গেলে আসক্তি পরিহার করে আমাদের কর্ম করতে হবে। তার মানেই হল এই যে, সংসারে নেওয়া এবং দেওয়া! এই যে ছটো বিপরীত ধর্শ আছে এই ছুই বিপরীতের সামগ্রস্ত করতে হবে__এর মধ্যে একটা একান্ত হয়ে উঠূলেই তাঁতে অকল্যাণ ঘটে। যদি নেওয়াটাই একমাত্র বড় হয় তাহলে আমরা আবদ্ধ হই, আর যদি 5. শান্তিনিকেতন দেওয়াটাই একমাত্র বড় হয় তাহলে আমর! বঞ্চিত হই। যদি কর্ম্নটা মুক্তি- বিবঞ্জিত হয় তাহলে আমরা দাস হই আর যদি মুক্তি কর্ম্মবিহীন হয় তাহলে আমর! বিনুগ্ত হই। বস্তত ত্যাগ জিনিষটা শুন্যতা নয়, তা অধিকারের পুর্ণতা। নাবালক যখন সম্পত্তিতে পুর্ণ অধিকারী না হয় তথন সে দান বিক্রয় করতে পারে না-_তখন তার কেবল ভোগের ক্ষুদ্র অধিকার থাকে ত্যাগের মহৎ অধিকার থাকে না। আমরা যে অবস্থা কেবল জমাতে পারি কিন্তু প্রাণ ধরে দিতে পারিনে সে অবস্থায় আমাদের সেই সঞ্চিত সামগ্রীর সন্বন্ধে আমাদের শ্বাধীনত! থাকে না। এই জন্তে খুষ্ট বলে গিয়েছেন, যে লোক ধনী তার পক্ষে মুক্তি বড় কঠিন। কেননা যেটুকু ধন সে ছাড়তে না পারে সেইটুকু চি ত্যা ধনই যে তাকে বাঁধে-্এই বন্ধটাকে যে তই বড় করে তুলেছে সে যে ততই বিপদে গড়েছে। এই সমস্ত বন্ধন প্রত্যহ শিথিল হয়ে আস্চে প্রত্যহ ত্যাগ আমাদের পক্ষে সহজ হয়ে আস্চে আমাদের উপাসনা থেকে এই ফলটি যেন লাভ করি। নানা আনক্তির নিবিড় আকর্ষণে আমাদের প্রকৃতি একেবারে পাথ- রের মত ত্বাট হয়ে আছে। উপাসনার সময় অমৃতের ঝরণা ঝরতে থাক-_আমাদের অণুপরমাণুর ছিদ্রের ভিতর দিয়ে প্রবেশ করতে থাক্‌__এই পাঁষাণটাকে দিনে দিনে বিশ্লিষ্ট করতে থাক্‌, আর্ত করতে থাক্‌, তার পরে ক্রমে এটা ক্ষইয়ে দিয়ে সরিয়ে দিয়ে জীবনের মাঝখানে একটি বুহৎ অবকাশ রচনা করে সেই অবকাশটিকে পূর্ণ করে দিকৃ। দেখ, একবার ভিতরের দিকে চেয়ে দেখ-_অস্তরের সঙ্কোচনগুলি তাঁর নামের আঘাতে প্রতিদিন 89 শান্তিনিকেতন প্রসারিত হয়ে আস্চে, সমস্ত প্রসন্ন হুচ্চে, শান্ত হচ্চে, কর্ম সহজ হচ্ছে, সকলের সঙ্গে সম্বন্ধ সত্য ও সরল হচ্চে, এবং ঈশ্বরের মহিমা! এই মানব জীবনের মধ্যে ধন্ত হয়ে উঠ্‌চে। ২৭শে অগ্রহায়ণ ১৩১৫ ৪৪. ত্যাগের ফল কিন্ত ত্যাগ কেন করব এ প্রশ্নটার চরম উত্তরটি এখনে মনের মধ্যে এসে পৌছল না। শাস্ত্রে উত্তর দেয় ত্যাগ না করলে স্বাধীন হওয়া যাঁয় না, যেটিকে ত্যাগ না করব সেইটিই আমাদের বন্ধ করে রাখবে-_ত্যাগের দ্বারা আমরা মুক্ত হব। মুক্তিলাভ করব এ কথাটার জোর ষে আমাদের কাছে নেই। আমর! ত মুক্তি চাচ্চিনে ; আমাদের ভিতরে যে অধীনতার একট! বিষম ঝোঁক আছে--আমর! যে ইচ্ছা করে থুসি হয়ে সংসারের অধীন হয়েছি --আমরা ঘটিবাটি থালার অধীন, আমরা ভৃত্যেরও অধীন, আমরা কথার অধীন, প্রথার অধীন, অসংখ্য প্রবৃত্তির অধীন--এতব্ড় জন্ম- অধীন দাসানুদাসকে এ কথা বলাই মিথ্যা যে, ক, শাস্তিনিকেতন মুক্তিতে তোমার সার্থকতা আছে; ঘে ব্যক্তি স্বভাঁকত এবং স্বেচ্ছাক্রমেই বন্ধ তাঁকে মুক্তির প্রলোভন দেখানো মিথ্যা । বস্তত মুক্তি তাঁর কাছে শূন্যতা, নির্ববীণ, মরুভূমি। যে মুক্তির মধ্যে তার ঘর দুয়ার ঘটিবাটি টাকাকড়ি কিছুই নেই, যা কিছুকে সে একমাত্র আশ্রয় বলে জান্ত তাঁর সমস্তই বিলুপ্ত-সে মুক্তি তার কাঁছে বিভীষিকা, বিনাশ । আমরা যে ত্যাগ করব তা যদি শূন্তার মধ্যেই ত্যাগ হয় তবে সে ত একেবারেই লোকসান। একটি কাঁনাকড়িকেও সেই রকম শৃন্যের মধ্যে বিসর্জন দেওয়া আমাদের পক্ষে একবারে অসহ্য । কিন্ত ত্যাগ ত শূন্যের মধ্যে নয়। যদ্‌ যদ্‌ কর্ম প্রকুব্বাত তদ্ত্রক্মণি সমর্পয়েখ_যাঁ কিছু করবে সমস্তই ব্রহ্দে সমর্পণ করবে । তোমার সংসারকে তোমার প্রিয়জনকে তোমার সমস্ত ৪ ত্যাগের ফল কিছুকেই তাঁকে নিবেদন করে দাঁও-_এই যে ত্যাগ এ যে পরিপূর্ণতার মধ্যে বিসর্জন । পূর্ণের মধ্যে যাকে ত্যাগ করি তাকেই সত্যব্ূপে পূর্ণরূপে লাভ করি এ কথ! পুর্ক্েই বলেছি। কিস্তু এতেও কথা শেষ হয় ন। কেবলমাত্র লাভের কথায় কোনো কথার সমাপ্তি হতে পারে না-_লাঁভ করে কি হবে এ প্রশ্ন থেকে যায়। স্বাধীন হয়েই বা কি হবে, পুর্ণত লাঁভ করেই বা কি হবে? যখন কোনো ছেলেকে পয়সা দিই সে জিজ্ঞাসা করতে পারে পয়সা নিয়ে কি হবে ? উত্তর যদি দিই বাজারে যাবে তাহলেও প্রশ্ন এই যে বাজারে গিয়ে কি হবে? পুতুল কিন্ৰে। পুতুল কিনে কি হবে? খেলা করবে। খেলা করে কি হবে? তখন একটি উত্তরে সব প্রশ্্ের শেষ হয়ে যায়__ খুসি হবে। খুসি হয়ে কিহবে এ প্রশ্ন কেউ কখনো! অন্তরের থেকে বলে না। ৪৭ শাস্তিনিকেতন ইচ্ছার পূর্ণ চরিতার্ধতা হয়ে যে আনন্দ ঘটে সেই আনন্দের মধ্যেই সকল প্রশ্ন সকল সন্ধান নিঃশেধিত হয়ে যায়| কেমন করে সংগ্রহ করব যার দ্বারা ত্যাগের শক্তি জন্মাবে? আমাদের এই প্রতিদিন উপাসনার মধ্যে আমরা কিছু কিছু সংগ্রহ করচি। এই প্রাতঃকালে সেই চৈতত্তস্বর্ূপের সঙ্গে নিজের চৈতন্কে নিবিড় ভাবে পরিবেষ্টিত করে দেখবার জন্টে আমাকে যে ক্ষণকালের জন্যেও সমস্ত আবরণ ত্যাগ করতে হচ্চে_ অনাবৃত হয়ে সগ্যোজীত শিশুর মত তাঁর কাঁছে আত্মসমর্পণ করতে হচ্চে_-এতেই আমার দিনে দিনে কিছু কিছু করে জমে উঠ্বে। আনন্দের সঙ্গে আনন্দ, প্রেমের সঙ্গে প্রেমের মিলন নিশ্চয় ক্রমশই কিছু না কিছু সহজ হয়ে আস্চে। কেমন করে ত্যাগ করব? সংসারের মাঝখানে থেকে অন্তত একটা মঙ্গলের ৪ ত্যাগের কল ধজ্ঞ আর্ত করে দাঁও। সেই মঙ্গল- ঘজ্ঞের জন্য তোমার ভাগারের একটা অতি ছে'ট দরজাও যদি খুলে রাখ তা হলে দেখবে আজ যে অনভ্যাসের দ্বারে একটু টান দিতে গেলেই আর্তনাদ করে উঠ্‌চে, যাঁর মর্চে- পড় তালায় চাবি ঘুরচে না-_ ক্রমেই তা খোলা অতি সহজ ব্যাপারের মত হয়ে উঠবে-_একটি শুভ উপলক্ষে ত্যাগ আরম্ভ হয়ে তা ক্রমশই বিস্তৃত হতে থাকৃবে। সংসারকে ত আমরা অহোরাত্র সমন্তই দিই, ভগবানকেও কিছু দাও প্রতিদিন একবার অস্তত মুষ্টিভিক্ষা দাঁও_সেই নিম্পৃহ ভিখারী তাঁর ভিক্ষাপাত্রটি হাতে হাসিমুখে প্রতিদিনই আমাদের দ্বারে আস্চেন এবং প্রতিদিনই ফিরে যাচ্চেন। তাঁকে যদি একমুঠো! করে দান করা আমরা অত্যাস করি তবে সেই দানই আমাদের সকলের চেয়ে বড় হয়ে উঠবে। ক্রমে সে আর আমাদের মুঠোয় ধরবে না, ক্রমে কিছুই 8 শান্তিনিকেতন আর হাতে রাখতে পারব না । কিস্তু তাকে যেটুকু দেব সেটুকু গোপনে দিতে হবে, তাঁর জন্যে কোনো মানুষের কাছে এতটুকু খ্যাতি চাইলে চল্বে নাঁ। কেননা লোককে দেখিয়ে দেওয়া সেটুকু এক রকম করে দিক্সে অন্তরকম করে হরণ কর! । সেই মহাভিক্ষুকে যা দিতে হবে তা অল্প হলেও নিঃশেষে দেওয়া চাঁই। তার. হিসেব রাখলে হবে না, তার রসিদ চাইলে চল্বে না । দিনের মধ্যে আমাদের একটা কোনো দান যেন এইন্ধপ পরিপূর্ণ দানি হতে পারে-_সে যেন সেই পরিপূর্ণ ্বরূপের কাছে পরিপূর্ণ ত্যাগ হয় এবং সংসারের মধ্যে এইটুকু ব্যাপারে কেবল তারই সঙ্গে একাকী আমার প্রত্যহ একটি গোপন সাক্ষাতের অবকাশ ঘটে। ২৮শে অগ্রহায়ণ । ১৩১৫ প্রেম বেদমন্ত্রে আছে মৃত্যুও তীর ছায়া, অমৃতও তাঁর ছায়া_উভয়কেই তিনি নিজের মধ্যে এক করে রেখেচেন। ধাঁর মধ্যে সমস্ত দ্বন্দের অবসান হয়ে আছে তিনিই হচ্ছেন চরম সত্য । তিনিই বিশুদ্ধতম জ্যোতি, তিনিই নির্মলতম অন্ধকার । সংসারের সমস্ত বিপরীতের সমন্বয় যদি কোনো একটি সত্যের মধ্যে না ঘটে তবে তাকে চরম সত্য বলে মানা যায় না। তবে তাঁর মধ্যে যেটুকু কুলোলোনা তার জন্তে আর একটা সত্যকে মান্তে হয়, এবং সে ছুটিকে পরস্পরের বিরুদ্ধ বলেই ধরে নিতে হয়। তাহলেই অমুতের জন্যে ঈশ্বরকে এবং মৃত্যুর জন্তে স়তানকে মানতে হয়। ১ শান্তিনিকেতন কিস্ত আমরা ব্রন্দের কোনো সরিককে মানিনে- আমরা জানি তিনিই সত্য, খণ্ড সত্যের সমস্ত বিরোধ তাঁর মধ্যে সামঞ্জন্ত লাভ করেছে; আমরা জানি তিনিই একট খণ্ড সত্তার সমস্ত বিচ্ছিন্নতা তার মধ্যে সন্মিলিত হয়ে আছে। কিন্ত এ তহল তত্ব কথা। তিনি সত্য একথা জান্লে কেবল জ্ঞানে জানা হয়_এর সঙ্গে আমাদের হৃদয়ের যৌগ কোথায়? এই সত্যের কি কোনো রসই নেই? তা বল্লে চল্বে কি করে? সমস্ত সত্য যেমন তাতে মিলেছে তেম্নি সমস্ত রসও যে তাতে মিলে গেছে । সেইজন্যে উপনিষৎ তাকে শুধু সত্য বলেন নি, তাকে রসস্বক্ধপ বলেচেন-_ তাকে সেই পরিপূর্ণ রসবূপে জান্লে জানান সার্থকতা হয় । তাহলে দীড়ায় এই যিনি চরম সত্য তিনিই পরম রস। অর্থাৎ তিনি প্ররেমস্বপ্ূপ। নইলে €হ প্রেষ তাঁর মধ্যে কিছুরই সমাধান হতে পারতই না_ভেদ ভেদই থাকৃত, বিরোধ কেবলই আঘাত করত এবং মৃত্যু কেবলি হরণ করে নিত। তীর মধ্যে যে সমস্তই মেলে__সেটা একটা জ্ঞানতত্বের মিলন নয়-_-তার মধ্যে একটি প্রেমতত্ব আছে-_সেই জন্য সমস্তকে মিল্তেই হয়_-সেই জন্যই বিচ্ছেদ বিরোধ কখনই চিরস্তন সত্য বস্ত হয়ে উঠতে পারে ন!। ইচ্ছার শেষ চরিতার্থতা প্রেমে । প্রেষে__ কেন, কি হবে, এ সমস্ত প্রশ্ন থাকতেই পারে না__-প্রম আপনিই আপনার জবাবদিহি, আপনিই আপনার লক্ষ্য । বদি বল ত্যাগের দ্বার! ত্যক্তবস্ত থেকে মুক্তিলাভ করবে তাতে আমাদের মন সায় দেয় না, যদি বল ত্যাগের দ্বারা ত্যক্ত বস্তুকে পূর্ণতর- রূপে লাভ কর্ধবে তাহলেও আমাদের মনের সম্পূর্ণরূপে সাড়া পাওয়া যায় না। যদি বল ত্যাগের ছারা প্রেমকে পাওয়া ষাবে,তাহলে মন রে শান্তিনিকেতন আর কথাটি কইতে পারে না-_এ কথাটাকে যদি সে ঠিকমত অবধান করে শোনে তবে তাকে বলে উঠতেই হবে “তাহলে যে বাঁচি।” ত্যাগের সঙ্গে প্রেমের ভারি একটা সম্বন্ধ আছে-_এমন সম্বন্ধ যে, কে আগে কে পরে তা ঠিক করাই দায়। প্রেম ছাঁড়া ত্যাগ হয় না, আবার ত্যাগ ছাড়া প্রেম হতে পারে না। যা! আমাদের কাছ থেকে প্রয়োজনের তাগিদে বা অত্যাচারের তাড়নায় ছিনিয়ে নেওয়া হয় সে ত ত্যাগই নয়--আমরা প্রেমে যা দিই তাই সম্পূর্ণ দিই, কিছুই তার আর রাখিনে, সেই দেওয়াতেই দাঁনকে সার্থক মনে করি। কিন্ত এই যে প্রেম এও ত্যাগের সাধনাতেই শেষে আমাদের কাছে ধরা দেয়। যে লোক চির- কাল কেবল আপনার দিকেই টানে, নিজের অহঙ্কারকেই জরী করবার জন্যে ব্যস্ত সেই স্বার্থপন্ন সেই দাস্ভিক ব্যক্তির মনে প্রেমের ৪৪ হো উদয় হয় না-_.প্রেমের সুর্য একবারে কুছে” লিকায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকে । স্বার্থের বন্ধন ছাড়তে হবে, অহস্কারের নাগপাশ মোচন করতে হবে, যা কেষল জমাবার জন্যেই জীবনপাঁত করেছি প্রত্যহ ত৷ ত্যাগ করতে বসতে হবে--ত্যাগটা যেন ক্রমশই সহজ হয়ে আসে, নিজে দিকের টানটা যেন প্রত্যহই আল্গ! হয়ে আসে । তা হলেই কি যাঁকে মুক্তি বলে তাই পাব ? হই! যুক্তি পাবে। মুক্তি পেয়ে কি পার? মুক্তির হা চরম লক্ষ্য সেই প্রেমকে পাব। প্রেম কে? তিনিই প্রেম বিনি কোনে! প্রয়োজন নেই তবু আমাদের জন্য সমস্তই ত্যাগ করচেন, তিনিই প্ররেমস্বরূপ | তিনি নিজে শক্তিকে বিশ্বত্হ্ষাণ্ডের, ভিতর দিয়ে নিয়ত আমাদের জন্য উৎসর্জন করচেন--সমন্ত জি তার ক্কত উৎসর্গ। আনন্দান্ধ্যেব খবিমানি তৃতাঁনি / জারকে--আননা থেকেই এই বা কিছু সমস্ত জি ক€ শান্তিনিকেতন হচ্ছে, দায়ে পড়ে কিছুই হচ্চে নাঁ- সেই স্মযনত সেই স্বতউৎসারিত প্রেমই সমস্ত শৃষ্টির মূল। এই প্ররেমন্বরূপের সঙ্গে আমাদের সম্পূর্ণ যোগ হলেই আমাদের সমুদয় ইচ্ছার পরিপূর্ণ চরিতার্থতা হবে। সম্পূর্ণ যোগ হতে গেলেই যার সঙ্গে যোগ হবে তার মতন হতে হবে। প্রেমের সঙ্গে প্রেমের দ্বারাই যোগ হবে । কিন্ত প্রেম যে মুক্ত, সে যে ম্বাধীন। দাসত্বের সঙ্গে প্রেমের আর কোঁনো তফাৎই নেই-কেবল দাসত্ব বন্ধ আর প্রেম মুক্ত । প্রেম নিজের নিয়মেই নিজে চূড়াস্ত ভাবে প্রতিষ্ঠিত, সে নিজের চেয়ে উপরের আর কারো কাছে কোনো বিষয়ে কোনো কৈফিয়ত দেয় না। সুতরাং প্রেমন্বর্ূপের' সঙ্গে মিলতে গেলে আমাদের সম্পূর্ণ স্বাধীন হতে হবে। শ্থাধীন ছাড়া স্বাধীনের সঙ্গে আদান প্রদান চল্তে পারে না। তীর সঙ্গে আমাদের এই কথাবার্তা ৫টি প্রেম হয়ে গেছে, তিনি আমাদের বলে রেখেছেন তুমি মুক্ত হয়ে আমার কাছে এস__যে ব্যক্তি দাস তার জন্য আমার আম দরবার খোলা আছে বটে কিন্ত নে আমার খাস দরবারে প্রবেশ করতে পারবে না । এক এক সময় মনের আগ্রহে আমর! তার সেই খাস দরবারের দরজার কাছে ছুটে যাই-_ কিন্তু বারী বারবার আমাদের ফিরিয়ে দেয়। বলে তোমার নিমন্ত্রণ-পত্র কই। খুঁজতে গিয়ে দেখি আমার কাছে যে কটা নিমন্ত্রণ আছে সে ধনের নিমন্ত্রণ, যশের নিমন্ত্রণ, অমৃতের নিমন্ত্রণ নয় । বারবার ফিরে আসতে হল- বারবার ! টিকিট-পরীক্ষককে ফণকি দেবার জো নেই। আমর! দাম দিয়ে যে ইঞ্টেশনের টিকিট কিনেছি সেই ইঞ্টেশনেই আমাদের নামতে হবে। আমরা বহুকালের সাধনা এবং বছুহুঃখের সঞ্ম়্ দিয়ে এই সংদার লাইনেরই নানা গম্যস্থানের ৫ শান্তিনিকেতন টিকিট কিনেছি অন্ত লাইনে ভা চল্বে ন!। এবার থেকে প্রতিদিন আবার অন্য লাইনের টাকা সংগ্রহ করতে হবে। এবার থেকে যা কিছু সংগ্রহ এবং যা কিছু ত্যাগ করতে হবে সে কেবল সেই প্রেমের জন্তে। সামগ্ন্ত আমরা আর কোনো চরম কথ! জানি বা না জানি নিজের ভিতর থেকে একটি চরম কথা বুঝে নিয়েছি সেটি হচ্চে এই যে, একমাত্র প্রেমের মধ্যেই সমস্ত দ্বন্দ এক সঙ্গে মিলে থাকতে পারে। যুক্তিতে তারা কাটাকাটি করে, ক্ষেতে তারা মারামারি করে, কিছুতেই তারা মিল্তে চায় না, প্রেমেতে সমস্তই মিট্মাট্‌ হয়ে যায়। তরকক্ষেত্রে কর্মক্ষেত্রে যার! দিতিপুত্র ও অদিতিপুত্রের মত পরম্পরকে একেবারে বিনাশ করবার জন্যেই সর্বদা উদ্ভত, প্রেমের মধ্যে তারা আঁপন ভাই। তর্কের ক্ষেত্রে দ্বৈত এবং অদ্বৈত পরম্পরের একাস্ত বিরোধী ;১-_ ই যেমন না-কে কাটে, না যেমন হাঁ-কে কাটে তারা তেমনি বিরোধী। কিন্ত প্রেমের ক্ষেত্রে দ্বৈত এবং ধবী খাস্তিনিকেতন অদ্বৈত ঠিক একই স্থান জুড়ে রয়েছে । প্রেমেতে একই কালে ছুই হওয়াও চাই এক হওয়াও চাই। এই ছই প্রকাণ্ড বিরোধের কোনোটাই বাদ দিলে চলে না আবার তাদের বিরুদ্ধ- রূপে থাকৃলেও চল্বে নাঁ। যা বিরুদ্ধ তাঁকে অবির্দ্ধ হয়ে থাকৃতে হবে এই এক শ্ত্িছাড়া কাণ্ড এ কেবল প্রেমেতেই ঘটে । এইজন্যই কেন ষে আমি অন্টের জন্যে নিজেকে উৎসর্গ করতে যাই নিজের ভিতরকার এই হস্ত তলিয়ে বুঝতে পারিনে-_কিস্ত স্বার্থ জিনিষটা বোঝা কিছুই শক্ত নয়। ভগবান প্ররেমস্বর্ূপ কিন! তাঁই তিনি এককে নিয়ে ছুই করেচেন আবার হুইকে নিয়ে এক করেচেন। স্পষ্টই যে দেখতে পাচ্ছি ছুই যেমন সত্য, একও তেমনি স্ত্য। এই অদ্ভুত ব্যাপারটাকেও ত যুক্তির দ্বার! নাগাল পাওয়া যাবে না-_-এষে প্রেমের কাণ্ড । উপনিষদে ঈশ্বরের সব্বন্ধে এইজন্যে কেবলি $ সামন্ত বিরুদ্ধ কথাই দেখতে পাঁই। য একোহ্বর্ে বহুধাশক্তিযোগাৎ বর্ণাননেকান্লিহিতার্থোদধাতি। তিনি এক, এবং তাঁর কোনো বর্ণ নেই অথচ বহুশক্তি নিয়ে সেই জাতিহীন এক, অনেক জাতির গভীর প্রয়োজনসকল বিধান করচেন। যিনি এক তিনি আবার কোথা থেকে অনেকের প্রয়োজন সকল বিধান করতে যান? তিনি যে প্রেমস্বরূপ-_তাই, শুধু এক হয়ে তাঁর চলে না, অনেকের বিধান নিয়েই তিনি থাঁকেন। স পর্যগাঁৎ শুক্রং আবার তিনিই ব্যদধাৎ- শাশ্বতীভ্যঃ সমাভ্যঃ-্-অর্থাৎ অনস্তদেশে তিনি ত্যক্ধ হয়ে ব্যাপ্ত হয়ে আছেন, আবার অনস্তকালে তিনি বিধাঁন করচেন, তিনি কাজ করচেন। একাধারে স্থিতিও তিনি গতিও তিনি । আমাদের প্রকৃতির মধ্যেও এই স্থিতি ও গতির সামজন্ত আমরা একটিমাত্র জায়গায় সি শান্তিনিকেতন দেখতে পাই । সেহচ্ছে প্রেমে। এই চঞ্চল সংসারের মধ্যে যেখানে আমাদের প্রেম কেবলমাত্র সেই খানেই আমাদের চিত্তের স্থিতি-আর সমস্তকে আমরা ছুই আর চলে যাই, ধরি আর ছেড়ে দিই, যেখানে প্রেম সেইখাঁনেই আমাদের মন স্থির হয়। অথচ সেইথানেই তাঁর ক্রিয়্াও বেশি। সেই- খানেই আমাদের মন সকলের চেয়ে সচল । প্রেমেতেই যেখানে স্থির করায় সেইথানেই অস্থির করে। প্রেমের মধ্যেই স্থিতিগতি এক নাম নিয়ে আছে। কম্মক্ষেত্রে ত্যাগ এবং লাভ ভিন্ন শ্রেণীভূক্ত-_তাঁরা বিপরীতপর্য্যায়ের । প্রেমেতে ত্যাগও যা লাভও তাই। যাকে ভালবাসি তাকে যা দিই সেই দেওয়াটাই লাভ। আনন্দের হিসাবের খাতায় জমা খরচ একই জারগায়-_ সেখানে দেওয়াও যা পাওয়াও তাই। ভগবাঁনও হৃষ্টিতে এই যে আনন্দের যজ্ঞ সাজ এই যে প্রেমের খেলা ফে'দেছেন এতে তিনি নিজেকে দিয়ে নিজ্মেকেই লাঁভ করচেন। এই দেওয়াঁপাওয়াকে একেবারে এক করে দেওয়াকেই বলে প্রেম । দর্শনশাস্ত্রে মস্ত একটা তর্ক আছে ঈশ্বর পুরুষ কি অপুরুষ তিনি সগুণ কি নিণ, তিনি [91591991 কি 10019615975] ? প্রেমের মধ্যে এই হানা একসঙ্গে মিলে আছে। প্রেমের একটা সগুণ, আর একটা কোটি নিগুপ। তার এ বলে আমি আছি আর একদিক বলে আমি নেই। “আমি” না হলেও প্রেম নেই, “আমি” ন! ছাড়লেও পরম নেই। সেই জন্যে ভগবান সগুণ কি নিও সে সমস্ত তর্কের কথা কেবল তর্কের ক্ষেত্রেই চলে-_সে তর্ক তাঁকে ম্পর্শও করতে পারে না। পাশ্চাত্য ধর্মতত্বে বলে আমাদের অনস্ত উন্নতি-_-আমরা ক্রমাগতই তাঁর দিকে যাই কোনে কালে তার কাছে যাইনে। আমাদের শান্তিনিকেতন উপনিষৎ বলেচেন আমর! তার কাছে যেতেও পারিনে আবার তাঁর কাছে যেতেও পারি-_ তাঁকে পাঁইও না, তাঁকে পাঁইও। যতোবাচো নিবর্তস্তে অপ্রাপ্যমনসাসহ-_আননং ব্র্গণো বিদ্বান ন বিভেতি কুতশ্চন। এমন অদ্ভুত বিরুদ্ধ কথা একই শ্লোকের ছুই চরণের মধ্যে ত এমন সুস্পষ্ট করে আর কোথাও শোনা যায়নি । শুধুবাঁক্য ফেরে না মনও তাঁকে না পেয়ে ফিরে আসে-_-এএএকেবারে সাফ জবাব । অথচ সেই ব্রন্মের আনন্দকে যিনি জেনেছেন তিনি আর কিছু থেকে ভয় পান না। তবেইত বাঁকে একেবারেই জানা যায় না তাকে এমনি জানা যার যে আর কিছু থেকেই ভয় থাকে না । সেই জানাটা কিসের জানা 1 আনন্দের জানা । প্পেমের জানা । এ হচ্চে সমস্ত না জানাকে লঙ্ঘন করে জানা । প্রেমের মধ্যেই না জানার সঙ্গে জানার গ্রকাস্তিক বিরোধ নেই। স্ত্রী তার শ্বামীকে ৬৬ সাজ জ্ঞানের পরিচয়ে সকল দিক থেকে সম্পূর্ণ না জান্তে পারে কিন্তু প্রেমের জানায় আননের জানায় এমন করে জানতে পারে যে, কোনো! জ্ঞানী তেমন করে জান্তে পারে ন!। প্রেমের ভিতরকার এই এক অস্ুত রহস্ যে, যেখানে একদিকে কিছুই জানিনে সেখানে অন্যদিকে সম্পূর্ণ জানি। প্রেমেতেই অসীম সীমার মধ্যে ধরা দিচ্চেন এবং সীম! অসীমকে আলিঙ্গন করচে-_তর্কের দ্বারা এর কোনো মীমাংসা করবার জো নেই। ধর্মশান্ত্রে ত দেখ! যাঁয় মুক্তি এবং বন্ধনে এমন বিরুদ্ধ সম্বন্ধ যে, কেউ কাউকে রেয়াৎ করে না। বন্ধনকে নিঃশেষে নিকাস করে দিয়ে মুক্তিলাভ করতে হবে এই আমাদের প্রতি উপদেশ । ম্বাধীনতা জিনিষটা! যেন একটা চূড়ান্ত জিনিষ পাশ্চাত্য শাস্ত্রে এই সংস্কার আমাদের মনে বদ্ধমূল করে দিয়েছে। কিন্তু একটি ক্ষেত্র আছে যেখানে অধীনত শীর্তিনিকতন এবং স্বাধীনতা ঠিক সমান গৌরব ভোগ করে একথা আমাদের ভুল্‌্লে চলবে না। সে হচ্চে প্রেমে । সেখানে অধীনতা স্বাধীনতার কাছে এক চুলও মা! হেট করে না'। প্রেমই সম্পূর্ণ শ্বাধীন এবং প্রেমই সম্পূর্ণ অধীন । ঈশ্বর ত কেবলমাঁজ মুক্ত নন ভাহলে ত তিনি একেবারে নিক্ষিম হতেন। তিনি নিজেকে বেঁধেছেন। না বদি বাধ্তেন তা হলে হ্ষ্টিই হতনা এবং হ্ষ্টির মধ্যে ফোনো নিয়ম কোনো তাৎপর্ধ্যই দেখ! যেত না। তার যে আনন্দকূপ, যেরূপে তিনি প্রকাশ পাচ্ছেন এই ত তার বন্ধনের রূপ । এই বন্ধনেই তিনি আমাদের কাছে আপন, আমাদের কাছে ন্দর। এই বন্ধন তার আমাদের সঙ্গে প্রণয়বন্ধন। এই তাঁর নিজরুত স্বাধীন বন্ধনেইত তিনি আমাদের সখা, আমাদের পিতা, এই বন্ধনে যদি তিনি ধরা ন! দিতেন তাহলে আমর! বল্‌তে পারতুম না যে, স এব বনধুর্জনিতা৷ স বিধাতা, তিনিই বন্ধু তিনিই পিতা তিনিই বিধাতা । এত বড় একটা আশ্চর্য্য কথা মানুষের মুখ দিয়ে ৰের হতেই পারত না। কোন্টা বড় কথা ? ঈশ্বর শুদ্ধবুদধমুক্ত, এইটে 1 না, তিনি আমাদের সঙ্গে পিতৃত্ে, সথিত্ে, পতিত্থে, বন্ধ-_এইটে ? ছটোইি সমান বড় কথা । অর্ীনতাকে অত্যন্ত ছোট করে দেখে তার সন্ধে আমাদের একটা হীন সংস্কার হয়ে গেছে। এ রকম অন্ধ সং্কার আরও আমাদের অনেক আছে। যেমন আমরা ছোটকে মনে করি তুচ্ছ, বড়কেই মনে করি মহৎ-যেন গণিতশান্্রের দ্বারা কাউকে মহত্ব দিতে পারে! তেমনি সীমাকে আমরা গাল দিয়ে থাকি । যেন, সীমা জিনিষটা যে কি তা আমরা কিছুই জানি! সীমা একটি পরমাম্চর্ধ্য রহন্ত। এই সীমাইত অসীমকে প্রকাশ করচে! এ কি রে শান্তিনিকেতন 'অনির্বচনীয়! এর কি আশ্চর্য্যরূপ, কি আশ্চর্য্যগুণ, কি আশ্চর্যযবিকাশ ! একক্প হতে আর একরূপ, একগুণ হতে আর এক- গুণ, এক শক্তি হতে আর এক শক্তি_-এরইব৷ নাশ কোথায়! এরইবা সীমা কোন্‌ খানে! সীম! ষে ধারণাঁতীত বৈচিত্র্যের, যে অগণনীক়্ বছলত্বের, যে অশেষ পরিবর্তন পরম্পরা প্রকাশ পাচ্চে তাকে অবজ্ঞা করতে পারে এত বড় সাধ্য আছে কার! বস্তুত আমর! নিজের ভাষাকেই নিজে অবজ্ঞা করি কিন্ত সীমা পদার্ধকে অবজ্ঞ! করি এমন অধিকার আমাদের নেই। অসীমের অপেক্ষা সীম! কোনে! অংশেই কম আশ্চর্য্য নয়, অব্যক্তের অপেক্ষা ব্যক্ত কোনোমতেই অশ্রদ্ধেয় নয়। স্বাধীনতা অধীনতা নিয়েও আমরা কথার খেলা করি। অধীনতাও ষে স্বাধীনতার সঙ্গেই এক আসনে বসে রান্বত্ব করে একথা! আমরা তুলে যাই। স্বাধীনতাই যে আমরা চাই ৬ সাম তা নয়, অর্ধীনতাও আমরা চাই। যে চাওয়াতে আমাদের ভিতরকার এই ছুই চাওয়ারই সম্পূর্ণ সামগ্রস্ত হয় সেই হচ্চে প্রেমের চাওয়া । বন্ধনকে স্বীকার করে বন্ধনকে অতিক্রম করব এই হচ্চে প্রেমের কাঁজ। প্রেম যেমন স্বাধীন এমন স্বাধীন আর দ্বিতীয় কেউ নেই আবার প্রেমের যে অধীনতা এত বড় অধীনতাই বা জগতে কোথায় আছে! অধীনতা জিনিষটা যে কত বড় মহিমািত বৈষুবধর্মে সেইটে আমাদের দেখিয়েছে। অদ্ভুত সাহসের সঙ্গে অসঙ্কোচে বলেছে ভগবান জীবের ,কাছে নিজেকে বাধা রেখেচেন- সেই পরম গৌরবের উপরেই জীবের অস্তিত্ব। আমাদের পরম অভিমান এই যে তিনি আমাদের ছেড়ে থাকতে পারেন নি--এই ধন্ধনটি তিনি মেনেচেন_ নইলে আমরা! আছি কিকরে? মা যেমন সন্তানের, রণ যেন প্রশীর ঞ$ শান্তিনিকেতন সেবা করে তিনি তেমনি বিশ্ব জুড়ে আমাদের সেবা করচেন। তিনি নিজে সেবক হয়ে সেবা জিনিষকে অসীম মাহাত্ম্য দিয়েছেন। তার প্রকাণ্ড জগৎটি নিয়ে তিনি ত খুব ধুমধাম করতে পারতেন কিন্ত আমাদের মন ভোলাবার এত চেষ্টা কেন? নান! ছলে নানা কলায় বিশ্বের সঙ্গে আমাদের এত ংখ্য ভাল লাগাবার সম্পর্ক পাঁতিয়ে দিচ্চেন কেন? এই ভাল লাগাবার অপ্রয়োজনীয় আয়োজনের কি অস্ত আছে? তিনি নানা দিক থেকে কেবলি বল্চেন তোমাকে আমার আনন্দ দিচ্চি তোমার আনন্দ আমাকে দাঁও। তিনি যে নিজেকে চারিদিকেই সীমার অপরূপ ছন্দে বেঁধেছেন_-নইলে প্রেমের গীতিকাব্য প্রকাশ হয় ন! ষে! এই প্রেমস্বর্ূপের সঙ্গে আমাদের প্রেম যেখানেই ভাল করে না মিল্চে সেইখানে সমস্ত জগতে তার বেন্রটা বাঁচে । সেইখানে দুর সামঞ্জস্ত কত ছুঃখ যে জাগ্চে তার সীমা নেই-_-চোখের জল বয়ে যাঁচ্চে। ওগো প্রেমিক, তুমি যে প্রেম কেড়ে নেবে না তুমি যে মন ভুলিয়ে নেবে একদিন সমস্ত মনে প্রাণে কীদিয়ে তার পরে তোমার প্রেমের থণ শোঁধ করাবে। তাই এত বিলম্ব হয়ে যাঁচ্চে_তাই ত, সন্ধ্যা হয়ে আসে তবু আমার অভিসারের সজ্জা হল না। ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৩১৫। কি চাই? আমরা এতদিন প্রত্যহ আমাদের উপাসনা থেকে কি ফল চেয়েছিলুম ? আমরা চেয়েছিলুম শাস্তি। ভেবেছিলুম এই উপাসনা বনম্পতির মত আমাদের ছাঁয়! দেবে, প্রতিদিন সংসারের তাপ থেকে আমাদের বাঁচাবে। কিন্ত শাস্তিকে চাইলে শাস্তি পাওয়! যায় না। তার চেয়ে আরো অনেক বেশি না চাইলে শীস্তির প্রীর্থনাও বিফল হয়। জরের রোগী কাতর হয়ে বলে আমার এই জালাটা জুড়োকৃ; হয়ত জলে ঝাঁপ দিয়ে পড়ে। তাঁতে যেটুকু শাস্তি হয় সেটা ত স্থায়ী হয় না এমন কি, তাতে তাপ বেড়ে যেতে পারে। রোগী যদি শাস্তি চা, স্বাস্থ্য না চাঁয় তবে সে শাস্তিও পাঁয় না৷ স্বাস্থ্যও পায় না। পু কি চাই আমাদেরও শাস্তিতে চল্বে না, প্রেম দরকার। বরঞ্চ মনে এ বে একটুকু শাস্তি পাওয়া যাব, কিছুক্ষণের জন্যে একটা! স্গিগ্ধতার আবরণ আমাঁদের উপর এসে পড়ে সেটাতে আমাদের ভুলায়,-আমরা মনে নিশ্চিত হয়ে বসি আমাদের উপাসনা সার্থক হল-_- কিন্তু ভিতরের দিকে সার্থকতা দেখ্‌তে পাইবেন। কেননা, দেখতে পাই, ব্যাধি যে যাঁয় না। সমস্ত দিন নানা ঘটনায় দেখতে পাই সংসারের সঙ্গে আমাদের সম্বন্ধ সহজ হয় নি। রোগীর সঙ্গে তাঁর বাহিরের প্রক্কৃতির সম্বন্ধ যে রকম দেইরকম হয়ে আছে । বাহিরে যেখানে সামান্ত ঠাণ্ডা রোগীর দেহে সেখানে অসহা শীত; হরের স্পর্শ যেখানে অতি মুছ রোগীর দেহে সেখানে ছুঃসহ বেদনা! আমাদেরও সেই. দশা, বাহিরের সঙ্গে ব্যবহারে আমাদের ওজন ঠিক থাঁকৃচে না । ছোট পি. কথা অত্যন্ত বড় করে শুন্চি, ছোট ব্যাপার অত্যন্ত ভারি হয়ে উঠ্‌্চে। ভার বাড়ে কথন? না, কেন্দ্রের দিকে ভারাকর্ষণ যখন বেশি হস়। পৃথিবীতে যে হান্কা জিনিষ আমরা সহজেই তুল্চি, যদ্দি বৃহস্পতিগ্রহে যাই তবে সেখানে সেটুকুও আমাদের হাড় গুড়িয়ে দিতে পারে । কেনন৷ সেখানে এই কেন্দ্রের দিকের আকর্ষণ পৃথিবীর চেয়ে অনেক বেশি। আমরাও তাই দেখ্‌চি আমাদের নিজের কেন্দ্রের দিকের টানট! অত্যন্ত বেশি-- আমাদের স্বার্থ ভিতরের দিকেই টান্চে, অহঙ্কার ভিতরের দিকেই টান্চে, এই জন্তেই সব জ্িনিষই অত্যন্ত ভারি হয়ে উঠুচে-_যা তুচ্ছ তা কেবলমাত্র আমার এ ভিতরের টানের জোরেই আমাকে কেবলই চাঁপ্‌্চে--সব জিনিষই আমাকে ঠেসে ধরেচে--সব কথাই আমাকে ঠেলে দিচ্চে-_ক্ষণকালের শাস্তির দ্বারা এটাকে ভূলে থেকে আমানের লাভটা! কি? রী ফি চাই এই চাপটা হাল্কা হয় কখন? প্রেমে। তখন যে এঁ টানটা বাইরের দিকে যায়। আমাদের জীবনে অনেকবার তার পরিচয় পেয়েছি । যেদিন প্রণয়ীর সঙ্গে আমাদের প্রণয় বিশেষভাবে সার্থক হয়েছে সেদিন কেবল যে আকাশের আলো উজ্জ্লতর, বনের শ্যামলতা শ্তামলতর হয়েছে তা নয় সেদিন আমাদের সংসারের ভারাকর্ষণের টান একে- বারে আল্গ! হয়ে গেছে। অন্তদিন ভিক্ষুককে যখন একপয়সামাত্র দিই সেদিন তাকে আধুলি দিয়ে ফেলি) অর্থাৎ অন্যদিন এক পয়সার যে ভার ছিল আক্জ বত্রিশ পয়পার দেই ভার। অন্ত দিন যে কাজে হয়রান্‌ হয়ে পড়তুম আজ সে কাজে ক্লান্তি নেই-- হঠাৎ কাজ হাকা! হক্সে গছে। পয়সা সেই পয়সাই আছে, কাজ সেই কাজই আছে, কেবল তার ওজন কমে গেছে কেননা টান যে আজ আমার নিজের কেন্দ্রের দিকে নয় ; প্রেমে ষে আমাকে শ& শান্তিনিকেতন বাইরে টান দিয়ে একেবারে এক মুহূর্তে সমস্ত জগতের বোঝা নামিয়ে দিয়ে গেছে । আমাদের সাধনা যেমনই হোঁক্‌ আমাদের ংসার সেই সঙ্গে যদি হাক্কা হতে না থাকে তবে বুঝ্ব যে হল না। যদি বুঝি টাকার ওজন তেম্নি ভয়ানক আছে, উপকরণের বোঝা তেমনিই আমাকে চেপে আছে, তার মধ্যে অতি ছোট টুকুকেও ফেলে দিতে পাৰি এমন বল আমার নেই; যদি দেখি কাব যত বড় তার ভার যেন তাঁর চেয়ে অনেক বেশি তাহলে বুঝ্তে হবে প্রেম জোঁটেনি-_- আমাদের বরণসতায় বর আসেনি । তবে আর এ শাস্তিটুকু নিয়ে কি হবে? ওতে আমাদের আসল জিনিসটা ফীকি দিয়ে অন্পে সন্তুষ্ট করে রাখ্বে। প্রেমের মধ্যে শুধু শাস্তি নেই তাতে অশাস্তিও আছে? জোয়ারের জলের মত কেবল যে তার পূর্ণতা তা নয় তারই মত তার গতিবেগও আছে +-- গ্ঙ কিচাই সে আমাদের ভরিয়ে দিয়ে বসিয়ে রাখ্বে না, সে আমাদের ভাটার মুখের থেকে ফিরিয়ে উপ্টো টানে টেনে নিয়ে যাবে-তখন এই অচল সংসারটাঁকে নিয়ে কেবলি গুণ-টানাটানি লগি-ঠেলাঠেলি করে মরতে হবে না--সে হুহু করে ভেসে চল্বে ! যতদিন সেই প্রেমের টান ন! ধরে ততদিন শান্তিতে কাজ নেই-__ততদিন অশাস্তিকে যেন অনুভব করতে পারি । ততদিন যেন বেদনাকে নিয়ে রাত্রে শুতে যাই এবং বেদনাকে নিম্ে সকাল বেলায় জেগে উঠি__চোখের জলে ভাপিয়ে দাও, স্থির থাকৃতে দিয়ে! না । প্রতিদিন প্রাতে যখন অন্ধকারের দ্বার উদঘাটিত হয়ে যাঁর, তখন যেন দেখতে পাই বন্ধু দাড়িয়ে আছ, সখের দিন হোক্‌ ছুঃখের দিন হোক্‌, বিপদের দিন হোক্‌, তোমার সঙ্গে আমার দেখা হল, আজ আমার আর ভাবন নেই, আমার আজ সমন্তই সহ হবে। যখন রি খর্তিনিকেতন প্রেম না থাকে, হে সখা, তখনই শাস্তির জন্তে দরবার করি। তখন অল্প পুঁজিতে যে কোনো আঘাত সইতে পারিনে-_কিস্ত যখন প্রেমের গভ্যুদয় হয় তখন যে দুঃখ যে অশাস্তিতে সেই প্রেমের পরীক্ষা হবে সেই ছুঃখ সেই অশাস্তি- কেও মাথায় তুলে নিতে পারি। হে বন্ধু, উপাসনার সমগ্ন আমি আর শাস্তি চাইব না__- আমি কেবল প্রেম চাইব। প্রেম শাস্তিক্ূপেও আস্বে অশাস্তিরপেও আস্বে, সুখ হয়েও 'স্‌্বে দুখ হয়েও আস্বে--সে যে-কোন বেশেই আসক তার মুখের দিকে চেয়ে যেন বল্‌্তে পারি তোমাকে চিনেছি, বন্ধু, তোমাকে 'চিনেছি। ৩০শে অগ্রহারণ, ১৩১৩ । প্রার্থনা । উপনিষৎ ভারতবর্ষের রন্ষজ্ঞানের বনম্পতি। এষে কেবল স্ন্দর শ্বামল ছায়ামদ্ধ তা নয়, এ বুহং এবং এ কঠিন। এর মধ্যে যে কেবল ঘিদ্ধির প্রাচ্য পল্পবিত তা নর এতে তপস্যার কঠোরতা উর্ধগামী হয়ে রয়েছে। সেই অত্র- ভেদী মুড অটলতার মধ্যে একটি মধুর ফুল ফুটে আছে-_তার গন্ধে আমাদের ব্যাকুল করে তুলেছে । সেটি এ মৈত্রেয়ীর প্রার্থনা- যনত্রটি। যাজ্ঞবন্কয যখন গৃহত্যাগ করবার সময় তার পত্ী ছটিকে তীর সমস্ত সম্পত্তি দান করে যেতে উদ্যত হলেন তখন মৈত্রেরী জিজ্ঞাসা করলেন, আচ্ছা বল ত এসব নিয়ে কি আমি যর হব? যাজ্ঞবন্্য বল্লেন, না, ত। ঘবে না, তে কি মা উপকরণবস্তেন্র যেমনততর সবীকন শান্তিনিকে তন তোমার জীবন সেই রকম হবে। সংসারীরা যেমন করে তাদের ঘর ছন্নার গোরুবাছুর অশনবসন নিজকে স্বচ্ছন্দে দিন কাটার তোমরাও তেমনি করে দিন কাটাতে পারবে । মৈত্রেয়ী তখন একমুহ্র্তে বলে উঠলেন প্যেনাহং নামৃতান্তাম্‌ কিমহং তেন কুর্বযাম্‌ !” যার ছার! আমি অমৃতা না হব তা নিয়ে আমি কিকরব! এ তো কঠোর জ্ঞানের কথা নয়-_তিনি তচিস্তার দ্বারা ধ্যানের দ্বারা কোন্টা নিত্য কোন্টা অনিত্য তার বিবেকলাভ করে একথা বলেন নি_-তার মনের মধ্যে একটি কষ্টপাথর ছিল যার উপরে সংসারের সমস্ত উপকরণকে একবার ঘষে নিয়েই তিনি বলে উঠলেন “আমি ঘ! চাই এতো তা নয় 1? উপনিষদে সমস্ত পুরুষ খধিদের জ্ঞানগস্ভীর বাণীর মধ্যে একটিমাত্র স্ত্রীকণ্ঠের এই একটিমাত্র ব্যাকুল বাক্য ধ্বনিত হয়ে উঠেছে এবং সে ধবনি লীন হয়ে যায়নি--সেই ধ্বনি তাদের চন প্রার্থনা মেঘমন্ত্র শান্ত সবরের মাঝখানে অপূর্ব একটি অশ্রুপূর্ণ মাধুর্য্য জাগ্রত করে রেখেছে। মানুষের মধ্যে যে পুরুষ আছে উপনিষদে নানাদিকে নানাভাবে আমরা তারই সাক্ষাৎ পেয়েছিলুম এমন সময়ে হঠাৎ একপ্রাস্তে দেখা গেল মানুষের মধ্যে যে নারী রয়েছেন তিনিও সৌন্দধ্য বিকীর্ণ করে দীড়িয়ে রয়েছেন । আমাদের অন্তর-প্রকৃতির মধ্যে একটি নারী রয়েছেন । আমর! তার কাছে আমাদের সমুদয় সঞ্চয় এনে দিই। আমরা ধন এনে বলি এই নাও। খ্যাতি এনে বলি এই তুমি জমিয়ে রাখ। আমাদের পুরুষ সমস্ত জীবন প্রাণপণ পরিশ্রম করে কতদিক থেকে কত কি যে আন্চে তার ঠিক নেই- স্ত্রীটিকে বল্চে এই নিয়ে তুমি ঘর ফাঁদ, বেশ গুছিয়ে ঘরকন্না কর, এই নিয়ে তুমি সুখে থাক। আমাদের অন্তরের তপস্থিনী এখনো স্পষ্ট করে বল্তে পারচে না যে, এসবে আমার কোনো ফল ৩ এ খকিনিকেতন হবে না, সে মনে ফরচে হয় ত আমি যা চাক্ছি তা বুঝি এইই । কিন্তু তবু সব নিয়েও সব পেলুম বলে তার মন মান্চে না। সে ভাব্চে হয় ত পাওয়ার পরিমাণটা আরো! বাড়াতে হবে টাকা আরো চাই, খ্যাতি আরে! ঘরকার, ক্ষমতা আরো না হলে চল্চে না। কিস্ত সেই আরোর শেষ হয় না। বস্তত সে যে আমৃতই চায় এবং এই উপকরণগুলো যে অমৃত নয় এটা একদিন তাঁকে বুঝতেই হবে--একদিন একমুহ্র্তে সমস্ত জীবনের স্ত,পাকার সঞ্চয়কে এক পাশে আবর্জনার মত ঠেলে দিয়ে তাকে বলে উঠতেই হবে-_-ষেনাহং নাস্তা হ্ডাম্‌ কিমহং তেন কুর্ধ্যাম্‌! কিন্তু মৈত্রের়ী এ যে বলেছিলেন "আমি যাতে অমৃতা না হবো তা নিয়ে আমি কি করব” তার মানেটা কি? অমর হওয়ার মানে কি এই পার্থিব শরীরটাকে অনস্তকাঁল বহন কমে চলা! ? অথব! মৃত্যুক্ন পরেও কোচনাযপে ৬ প্রার্থনা জন্মাস্তরে বা অবস্থাস্তরে টিকে থাকা? মৈজ্রেরী যে শরীরের অমরতাঁ চান নি এবং আত্মার নিত্যতা সম্বদ্ধেও তার কোনে ছুশ্চিস্ত! ছিল না একথা নিশ্চিত। তবে তিনি কিভাবে অমৃত। হতে চেয়েছিলেন ? তিনি এই কথা বলেছিলেন, সংসারে আমরা ত কেবলি একটার ভিতর দিয়ে আর একটাতে চলেছি__কিছুতেই ত স্থিয় হয়ে খাকৃতে পারচিনে । আমার মনের বিষয়গুলোও সরে যায় আমার মনও সরে যাঁয়। যাঁফে আমার চিত্ত অবলম্বন করে তাকে যখন ছাড়ি তখন তার সব্ন্ধে আমার মৃত্যু ঘটে। এমনি ফরে ক্রমাগত এক মৃত্যুর ভিতর দিয়ে আর মৃত্যুতে চলেছি-_এই যে মৃত্যুর পর্যায় এর 'আর অস্ত নেই। অঞ্চচ আমার মন এমন কিছুকে চায় যাঁর থেকে তাকে আর নড়জেহবে না__যেটা পেলে সে বল্‌্তে পারে এ ছাড়! আমি আর 'শাস্তিনিকেতন বেশি চাইনে--যাকে পেলে আর ছাঁড়া-ছাঁড়ির কোনো কথাই উঠ্‌বে না ! তা হলেই ত সৃত্যুর হাত একেবারে এড়ানো যায়। এমন কোন্‌ মানুষ এমন কোন্‌ উপকরণ আছে যাঁকে নিয়ে বল্‌্তে পারি এই আমার চিরজীবনের সম্বল লাভ হয়ে গেল-_ আর কিছুই দরকার নেই! সেইজন্টেই ত শ্বামীর ত্যক্ত সমস্ত বিষয় সম্পত্তি ঠেলে ফেলে দিয়ে মৈত্রেয়ী বলে উঠে- ছিলেন এসব নিয়ে আমি কি করব ! আমি যে অমৃতকে চাই ! আচ্ছা, বেশ, উপকরণ ত অমৃত নয়, তা হলে অমৃত কি! আমরা জানি অমৃত কি। পৃথিবীতে একেবারে যে তার স্বাদ পাইনি তা নয়। যদি না পেতুম তা হলে তার অন্তে আমাদের কানন উঠত না । আমর! সংসারের সমস্ত বিষয়ের মধ্যে কেবলি তাকে খুঁজে বেড়াচ্চি, তার কারণ ক্ষণে-ক্ষণে সে আমাদের স্পর্শ করে যায়। ৬৪ প্রার্থনা মৃত্যুর মধ্যে এই অমৃতের স্পর্শ আমরা কোন্খানে পাই? যেখানে আমাঁদের প্রেম আছে। এই প্রেমেই আমর! অনন্তের স্বাদ পাই। প্রেমই সীমার মধ্যে অমীমতার ছাতা ফেলে পুরাতনকে নবীন করে রাখে, মৃত্যুকে কিছুতেই স্বীকার করে না। সংসারের বিচিত্র বিষয়ের মধ্যে এই যে প্রেমের আভাস দেখতে পেয়ে আমরা মৃত্যুর অতীত পরম পদার্থের পরিচয় পাই, তার স্বরূপ যে প্রেমস্বরূপ তা বুঝতে পারি _এই প্রেমকেই যখন পরিপূর্ণরূপে আকাজ্ষা আবিফষার করি তখন আমরা সমস্ত উপকরণকে অনায়াসেই ঠেলে দিয়ে বল্তে পারি *যেনাহং নামৃতঃ স্তাম্‌ কিমহং তেন কুষ্যাম্‌!” এই যে বলা, এটি যখন রমণীর সুখের থেকে উঠেছে তখন কি ম্পষ্ট,কি সত্য, কৈ মধুর হয়েই উঠেছে। সমস্ত চিস্তা সমস্ত ৫ যুক্তি পরিহার করে কি অনায়াসেই এটি ধ্বনিত হয়ে উঠেছে । ওগো, আমি খর-ছুয়ার কিছুই চাইনে আমি প্রেম চাই-_-এ কি কানন! ! মৈত্রেয়ীর সেই সরল কান্নাটি ষে প্রার্থনা- রূপ ধারণ করে জাগ্রত হয়ে উঠেছিল তেমন আশ্চর্য্য পরিপূর্ণ প্রার্থনা] কি জগতে আর কোথাও কখনো শোনা গিয়েছে? সমস্ত মানবহদয়ের একান্ত প্রার্থনাটি এই রমণীর ব্যাকুলকণ্ঠে চিরস্তনকালের জন্যে বাণীলাশত করেছে। এই প্রার্থনাই আমাদের প্রত্যেকের একমাত্র প্রার্থনা, এবং এই প্রার্থনাই বিশ্ব মানবের বিরাট ইতিহাসে যুগে যুগাস্তরে উচ্চারিত হয়ে আন্চে ! যেনাহং নামৃতা স্তাম্‌ কিমহং তেন কুর্ধাম্‌ এই কথাটি সবেগে বলেই কি সেই ব্রহ্মবাদিনী তখনি জোড়হাঁতে উঠে দাড়ালেন এবং তার অশ্রপ্লাবিত মুখটি আকাশের দিকে তুলে বলে উঠলেন-_অসতোমা সদগময়,। তমসোমা! ৯০ প্রার্থনা জ্যোতির্ময়, মৃত্যোর্মাযুতঙ্গমরর-__'আাবিরাবীর্য- এধি_ দ্র যত্তে দক্ষিণংমুখং তেন মাং পাঁহি নিত্যম্‌? উপনিষদে পুরুষের কঠে আমরা অনেক গ্রভীর উপলব্ধির কথ। পেয়েছি কিস্ত কেবল স্রীর কেই এই একটি গভীর প্রার্থনা লাত করেছি। আমরা যথার্থ কি চাই অথচ কি নেই তার একাগ্র অনুভূতি প্রেমকাতর রমণী- হৃদয় থেকেই অতি সহজে প্রকাশ পেয়েছে। -হে সত্য, সমস্ত অসত্য হতে আমাকে তোষার মধ্যে নিয়ে যাও, নইলে যে আমাদের প্রেম উপবাসী হয়ে থাকে, হে জ্যোতি, গভীর অন্ধকার হতে আমাকে তোমার মধ্যে নিয়ে যাঁও, নইলে যে আমাদের প্রেম কারাকুদ্ধ হয়ে থাকে, হে অমৃত, নিরস্তর মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে আমাকে তোমার মধ্যে নিয়ে যাও, নইলে ঘে আমাদের প্রেম আ'সন্নরাত্রির পথিকের মত নিয়াশ্রয় হয়ে ঘুরে ঘুরে বেড়ায় । হে প্রকাশ, শান্তিনিকেতন | আঁমার সমস্ত প্রেম সার্থক হবে। আঁবিরাবীর্ঘ- এরধি-হে আবিঃ হে প্রকাশ, তুমি ত চির- প্রকাশ, কিন্ত তুমি একবার আমার হও, আমার হয়ে প্রকাশ পাও আমাতে তোমার প্রকাশ পূর্ণ হোক! হে কুদ্রহে ভয়ানক-_ তুমি ষে পাপের অন্ধকারে বিরহব্ধপে ছুঃসহ রুদ্র, বত্তে দক্ষিণংমুখং, তোমার যে প্রসন্নসন্দয় মুখ, তোমার যে প্রেমের মুখ, তাই আমাকে দেখাও--তেন মাং পাহি নিত্যম্--তাই দেখিয়ে আমাকে রক্ষা কর, আমাকে বাঁচাও, আমাকে নিত্যকাঁলের মত বাচাও-_-তোমার সেই প্রেমের প্রকাশ, সেই প্রসন্নতাই আমার অনন্তকালের পরিত্রাণ ! হে তপস্থিনী মেত্রেরী, এপ সংসায়ের উপকরণপীড়িতের হৃদয়ের মধ্যে তোমার পবিত্র অসৃতের প্রার্থনাটি তোমার মৃত্যুহীন যধুকর